কালী কথা – দেবী ঝিংলেস্বরী

38

কালী কথা – দেবী ঝিংলেস্বরী

 

কালী কথায় আজ বলবো পূর্ব মেদিনীপুরে অবস্থিত ঝিংলেস্বরী মায়ের মন্দিরের কথা|

 

একান্ন সতী পীঠের অন্যতম তমলুক বর্গভীমা মায়ের সঙ্গে ঝিঙলেশ্বরী মায়ের গভীর যোগাযোগ রয়েছে বলে। লোকমুখে প্রচলিত। দেবী বর্গভীমাকে ভীমা মা বলা হয়। কথিত আছে ভীমা মায়ের বোন দেবী ঝিংলেশ্বরী।শোনা যায় এক কালে নদীর গভীরে গোপন সুড়ঙ্গ পথে ভীমা মা এবং ঝিঙলেশ্বরী মায়ের মন্দিরে যাওয়ার পথ ও ছিলো।সেই পথ আজ লুপ্ত তবে বহু জনশ্রুতি আজও রয়ে গেছে।

 

কথিত আছে আগে এই স্থান দিয়ে বয়ে যেতো হলদি নদী, নদীতে যাতায়াত করতো বিরাট বিরাট জাহাজ, একবার এমনই একটি জাহাজ নোঙর ফেলেছিলো এই স্থানে|জাহাজের নাবিকরা যখন ধূমপান করতে ব্যাস্ত তখন হটাৎ একটি মেয়ের আবির্ভাব হয় সেখানে, মেয়েটি নাবিকদের কাছে আগুন চায়|নাবিকরা মেয়েটিকে আগুন নিতে জাহাজে আসতে বলে|মেয়েটির রহস্যময়ী ভাবে হেসে বলে সে জাহাজে উঠলে বিপর্যয় ঘটতে পারে|নাবিকরা ছোট্ট মেয়েটির কথায় গুরুত্ব না দিলে অবশেষে মেয়েটিকে জাহাজে উঠতে হয়|মেয়েটি জাহাজে পা দেয়ার সাথে সাথে জাহাজ বসে যায় এবং মাস্তলে দেখা যায় দেবী মূর্তি|

 

এই অলৌকিক ঘটনা আজও লোকের মুখে শোনা যায়|মানুষের বিশ্বাস ওই স্থানেই নির্মিত হয়েছে এই প্রাচীন ঝিংলেস্বরী মন্দির|দেবী সেদিন বালিকার বেশে নাবিক দের জাহাজে উঠেছিলেন|আজও তিনি ঝিংলেস্বরী রূপে সেই স্থানে স্বমহিমায় বিরাজমান|

 

বর্তমানে পূর্ব মেদিনীপুরের ভবানীপুর নামক স্থানে রয়েছে এই প্রাচীন মন্দির যা কোনো শক্তি পীঠ না হয়েও স্থানীয়দের কাছে বিশেষ শ্রদ্ধার এবং অত্যন্ত প্রসিদ্ধ|

 

প্রাচীন মন্দিরটি ঠিক কবে নির্মিত হয়েছিলো এবং কে নির্মাণ করেছিলেন তা সঠিক ভাবে জানা যায়না তবে পরবর্তীতে মহিষাদলের রাজা প্রচুর জমি দান করেন মন্দিরের উদ্দেশ্যে এবং মন্দিরের পূজার ভার অর্পণ করা হয় একটি বিশেষ পরিবারকে যে পরম্পরা আজও চলছে|দেবী এখানে উগ্রতারা রূপে বিরাজিতা|দূর্গা পুজো উপলক্ষে এখানে বহু মানুষের সমাগম হয় এবং নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়|তাছাড়া সারাবছরই সূর্য দয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত নিত্য পুজোর

আয়োজন হয়।

 

ফিরে আসবো কালী কথার আগামী পর্ব নিয়ে। থাকবে আরো একটি প্রাচীন মন্দিরের ইতিহাস এবং তার মাহাত্ম। দেখতে থাকুন।