কালী কথা – তারাশঙ্করী পীঠের কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
শুরু করেছি কালী ঘাটের কালীদিয়ে আজ কালী কথায় কলকাতার বেলগাছিয়া অঞ্চলে অবস্থিত আরো এক প্রসিদ্ধ কালী মন্দির
নিয়ে আলোচনা করবো কালী কথায়।আজকের পর্বে জাগ্রত তারা শঙ্করী পীঠ সম্পর্কে লিখবো।
শাস্ত্রে উল্লেখিত শক্তি পীঠ নাহলেও তারাপীঠের মতো এটিকেও একটি সিদ্ধ পীঠ রূপে দেখা হয়। ১৯৫২ সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক এবং তন্ত্রমতে মায়ের আরাধনা শুরু করেন ।
শোনা যায় অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন যোগী মহারাজ পরেশচন্দ্র রায় মৌলিক। তিনি ভবিষ্যত দেখতে পারতেন|একবার তৎকালীন এক নামি রাজনীতি বিদ এই মন্দিরে এসেছিলেন তখন মাতৃ সাধক ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছিলেন তিনি সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হবেন এবং মন্ত্রী হবেন।পরবর্তীতে বাস্তবে হয়েছিল ঠিক তেমনটাই। তিনি প্রথমে সাংসদ হন এবং পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন।
বহু প্রাচীন কাল থেকে একটি অদ্ভুত রীতি পালিত হয় এই মন্দিরে|মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় বারাণসীর মণিকর্নিকা মহাশ্মশান থেকে এক সধবার চিতার আগুন আনা হয় এখানে সেই থেকে আজ পর্যন্ত জ্বলছে সেই চিতার আগুন|অত্যন্ত পবিত্র অগ্নি রূপে এই আগুন কে শ্রদ্ধা করা হয় এই মন্দিরে|
মা তারার পাশাপাশি এই মন্দিরের পূজিত হন যশমাধব।তার মূর্তি নিমকাঠের তৈরি যা আনা হয়েছিলো বাংলাদেশ থেকে।নিত্য পুজোয়
যশমাধবকে দেওয়া হয় নিরামিষ ভোগ।
একই সঙ্গে তারাশঙ্করী পীঠে পূজিত হন কালভৈরব|তারাশঙ্করী পীঠের আরও এক আকর্ষণ হল ‘নরমুণ্ডি আসন’। বাঘ, হাতি, শেয়াল, সাপ, অপঘাতে মৃত ব্যক্তি, চণ্ডাল ইত্যাদির ৯টি মাথার খুলি দিয়ে সজ্জিত এই আসন তন্ত্র সাধনায় ব্যাবহিত হতো।
তারাশঙ্করী পীঠ কলকাতা তথা দেশের অন্যতম প্রসিদ্ধ এবং জাগ্রত কালী ক্ষেত্র।প্রায় প্রত্যেক বিশেষ তিথি এবং দীপান্বিতা অমাবস্যায় এখানে বিশেষ পুজো এবং হোম যজ্ঞর আয়োজন হয়।সেই সময়ে বহু মানুষের ভিড় হয় এই মন্দির প্রাঙ্গনে।
আগামী পর্বে আবার ফিরে আসবো অন্য
একটি কালী মন্দিরের কথা নিয়ে কালী কথায়।ফল হারিণী অমাবস্যা পর্যন্ত
চলবে কালী কথা।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।