ভক্তের ভগবান
জগদীশ পন্ডিত এবং প্রভু জগন্নাথ
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজকের পর্বে আপনাদের পরম বৈষ্ণব এবং শ্রী চৈতন্যদেবের অন্যতম প্রিয় শিষ্য শ্রীল জগদিশ পন্ডিতের সাথে ঘটে যাওয়া জগন্নাথ দেবের এক অদ্ভুত লীলা প্রসঙ্গে লিখবো।
শ্রী চৈতণ্য দেবের নির্দেশে একবার জগদীশ পন্ডিত পুরী ভ্রমণ করেন।শ্রীধাম পুরীতে পৌঁছে জগদীশ পণ্ডিত ভগবান জগন্নাথের দিব্য দর্শন লাভ করেন।জগন্নাথ প্রেমে উন্মাদ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরী হয়। জগদীশ পন্ডিত বেশ বুঝতে পেরে ছিলেন জগন্নাথকে ছেড়ে থাকা তার পক্ষে আর সম্ভব নয়। ভগবান ও ভক্তের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে তাকে স্বপ্নে দর্শন দেন এবং বলেন তিনি যেনো তার দারু ব্রহ্ম মূর্তি সাথে নিয়ে যান এবং নিজের মাতৃ ভূমি তে সেই মূর্তি স্থাপন করে জগন্নাথ সেবা করেন।
একই সাথে জগন্নাথ উড়িষ্যার রাজার কাছে আবির্ভূত হন এবং তাকে নির্দেশ দেন তিনি যেনো জগদীশ পন্ডিতকে এই মূর্তি প্রদান করেন। রাজা সেই আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন।
জগদীশ পন্ডিত আনন্দিত হন এবং একই সঙ্গে চিন্তায় পরে যান যে কিভাবে তিনি ওই
ভারী বিগ্রহ বাংলায় নিয়ে যাবেন। জগন্নাথ
তাকে দেখা দিয়ে আশ্বস্ত করেন যে তিনি
এই বিগ্রহের ভার অনুভব করবেন না এবং তিনি যেন বিগ্রহটি একটি নতুন কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন এবং তাকে একটি লাঠির শেষে ঝুলিয়ে নিয়ে যান। এবং জগন্নাথ তাকে সতর্ক করেছিলেন যে একবার তিনি মাটিতে বসালে।সেই জায়গাটি তার স্থায়ী আবাসে পরিণত হবে।আর বিগ্রহ তোলা যাবেনা।
দুই ব্রাহ্মণের সাহায্যে জগদীশ ভগবান জগন্নাথকে বাংলার দিকে নিয়ে যান। চাকদহের কাছে গঙ্গার তীরে তারা যখন গঙ্গায় স্নান করছিলেন তখন তারা উপলব্ধি করেন যে ভগবান জগন্নাথ হঠাৎ খুব ভারী হয়ে উঠেছেন। আর তার ভার বহন করা সম্ভব নয়। জগদীশ পন্ডিত বুঝতে পারেন যে ভগবান জগন্নাথ সেই স্থানেই থাকতে চান।সেখানেই মন্দির বানিয়ে শুরু হয়
জগন্নাথ সেবা। আজও নিত্য পুজো হয়
জগদীশ পন্ডিতের বিখ্যাত এই
জগন্নাথ মন্দিরে। বিশেষ বিশেষ তিথিতে
বহু ভক্ত সমাগম হয়।
ভক্তের ভগবানের পরবর্তী পর্বে থাকবে এমনই
এক ভক্তের কথা এবং বিশেষ একটি
অলৌকিক লীলা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।