কালী তীর্থ – টাকি জমিদার বাড়ির কালী পুজো

77

কালী তীর্থ – টাকি জমিদার বাড়ির কালী পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

বাংলায় জাগ্রত মন্দিরের অভাব নেই আর এই সব মন্দিরকে কেন্দ্র করে আছে অসংখ্য অলৌকিক ঘটনার উল্লেখ।যার মধ্যে অনেকগুলি আমি আগে কালী কথায় বলেছি। তবু অনেক গল্প, অনেক ইতিহাস এখনো বলা বাকি আছে। তাই কালী তীর্থ নিয়ে ফিরে এসেছি।

 

আজকের পর্বে টাকির প্রসিদ্ধ রায় চৌধুরী বাড়ির কালী পুজোর ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করবো।

 

জনশ্রুতি আছে বহুবছর আগে ইছামতীতে জেলেদের জালে উঠে এসেছিল একটি সুন্দর নকশা করা ঘট। সেকথা জানতে পারেন টাকির জমিদার রায়চৌধুরীরা। জমিদার গিন্নি সেই রাতেই স্বপ্ন দেখেছিলেন চালাঘর তৈরি করে ঘটটি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খড়, বিচালি, গোলপাতা দিয়ে মাটির দেওয়ালের মন্দির বানিয়ে কালীপুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে মন্দিরটি নতুন করে সংস্কার করা হয়।নদীর স্থানীয় জমিদার রায়চৌধুরি পরিবারের হাত ধরেই টাকির কুলেশ্বরী কালীবাড়ির পুজো শুরু হয়েছিল। সেই থেকে আজও একইভাবে দেবীর পুজো চলে আসছে।এই দেবী রায় চৌধুরী পরিবারের কুলদেবী এবং সমগ্র টাকির মানুষের কাছের অত্যন্ত শ্রদ্ধার।

 

এই দেবী সম্পর্কে অনেকে আবার বলেন একবার এক মাতৃ সাধক ইছামতীর পাড়ে মা কালীর সাধনা করতেন এবং তার প্রতিষ্ঠিত ঘট নদীর পাড়ে পড়েছিল। এরপর টাকির জমিদারকে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন ওই ঘট প্রতিষ্ঠা করার। তখনই টাকির জমিদার কালীমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন।

 

চারশো বছর ধরে এখানে চলে নিত্যপুজো ও অন্নভোগ। বছরের বিশেষ তিথিতে এই মন্দিরে বড় আকারে পুজো করা হয়। একটা সময় এই পুজোয় কামান দাগা হত তন্ত্র মতে বলী দিয়ে পুজো হতো। সেই সব রীতির কিছু কিছু আজও বজায় আছে। ভক্তরা বিশ্বাস করেন দেবী এখানে অত্যন্ত জাগ্রত এবং তিনি ভক্তদের মনোস্কামনা পূরণ করেন।

 

নদীর কুল থেকে দেবীর ঘট উদ্ধার হয়েছিল তাই দেবীকে অনেকে কুলেশ্বরী নামেও ডাকেন।

 

চলতে থাকবে কালী তীর্থ । এখনো অনেক দেবী মন্দির নিয়ে আলোচনা বাকি আছে। ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।