বিশেষ পর্ব – কপিল মুনীর মাহাত্ম

109

বিশেষ পর্ব – কপিল মুনীর মাহাত্ম

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

শুরু হয়ে গেছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় মিলন উৎসব গঙ্গা সাগর মেলা |প্রতিবছর মকর সংক্রান্তির পুন্য তিথিতে লক্ষ লক্ষ পূর্ণার্থী ভিড় জমান এই মেলায়|এই স্থান ঘিরে রয়েছে এক পৌরাণিক ঘটনার উল্লেখ যার প্রধান চরিত্র কপিল মুনী|গঙ্গা সাগর ও কপিল মুনীর আশ্রম প্রায় সমার্থক! কিন্তু কে এই কপিল মুনী?

আজকের পর্বে আসুন জেনে নিই কপিল মুনির আধ্যাত্মিক মাহাত্ম।

 

কপিল মুনি একজন বৈদিক ঋষি ছিলেন এবং তাঁকে সাংখ্য দর্শনের অন্যতম প্রবর্তক বলে মনে করা হয়। ভগবত গীতায় কপিল মুনির উল্লেখ রয়েছে|আবার কিছই শাস্ত্র অনুসারে অনুসারে তিনি ব্রহ্মার পৌত্র মনুর বংশধর। আবার অনেকে বলেন কপিল মুনি হলেন বিষ্ণু ভক্ত প্রহ্লাদের পুত্র|

 

কপিল মুনীর সাংখ্য দর্শনের মূল কথা হলো আত্মা মানুষের কর্ম অনুসারে দেহান্তরে প্রবেশ করে। যখন কর্ম ক্ষয় তখন আর আত্মা দেহান্তরে প্রবেশ করেনা। এই দর্শন নিরিশ্বর বাদের উপর প্রতিষ্ঠিত।সাংখ্য দর্শন আরো বলে যে জড় জগৎ প্রকৃতি থেকে উদ্ভুত।

 

আগের একটি পর্বে বলেছি কিভাবে রাজা ভগীরথ মা গঙ্গাকে মর্তে এনে তার পূর্ব পুরুষদের

মুক্ত করেন। এখানেও প্রধান চরিত্র কপিল মুনী তার ক্রোধের ফলেই ভগীরথের পূর্বপুরুষরা অভিশপ্ত হয়ে ছিলেন।

 

সূর্য বংশীয় রাজা সগর অশ্বমেধ যজ্ঞের আয়োজন করেন। নিজের আসন বিপন্ন হবে তাই ভীত হয়ে দেবরাজ কপিল মুনির অজান্তেই যজ্ঞের ঘোড়া চুরি করে বেঁধে রাখেন তাঁর আশ্রমে।

রাজার আদেশে তার ষাট হাজার সন্তান যজ্ঞর নিরুদ্দেশ ঘোড়া খুঁজতে এসে উপস্থিত হন কপিল মুনির আশ্রমে। না বুঝেই তাঁরা মুনিকে অপরাধী সাব্যস্ত করেন এবং চোর ও চক্রান্তকারী অপবাদ দেয়।অসীম ক্ষমতাধর কপিলমুনি রেগে গিয়ে তাঁদের অভিশাপ দেন এবং তাঁরা ভস্মীভূত হয়ে যায়। কপিল মুনী যেমন ক্রোধ বসবর্তী হয়ে শাস্তি দিয়ে ছিলেন তেমনই দয়ালু হয়ে তাদের মুক্তির পথ ও বলে দিয়েছিলেন।

 

বর্তমানে গঙ্গা সাগরে অবস্থিত কপিল মুনির আশ্রম এবং মন্দিরে কপিল মুনী, রাজা সগর এবং মাতা গঙ্গার মূর্তি একত্রে বিরাজমান। বহু দর্শণার্থী আসেন এই মন্দিরে পুজো দিতে এবং নিজ নিজ মনোস্কামনা জানতে।

 

ফিরে আসবো পরের পর্বে আরো একটি আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে আলোচনায়। পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।