ভক্তের ভগবান – কৃষ্ণভক্ত গোপেশ্বর মহাদেব
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
দেবাদিদেব মহাদেব দেবতাদের আরাধ্য দেবতা। দেবতারা তার ধ্যান করেন কিন্তু তিনি নিজে পরম বৈষ্ণব এবং হরির ভক্ত। তিনি নিজে কৈলাশে সর্বদা হরির ধ্যানে মগ্ন থাকেন।একবার ভক্ত মহাদেব তার আরাধ্য বিষ্ণুকে কৃষ্ণ রূপে দেখতে এবং তার সান্নিধ্য লাভ করতে এক অদ্ভুত কান্ড ঘটিয়ে ছিলেন।
একবার মহাদেব যখন কৈলাশে গভীর ধ্যানে মগ্ন সেই অবস্তায় তিনি শ্রী কৃষ্ণের বাঁশির মধুর ধ্বনী শুনতে পেলেন।সেই অতীন্দ্রিয় শব্দ অনুসরণ করে তিনি বৃন্দাবনে পৌঁছান যেখানে ভগবান গোপীনাথ তাঁর গোপীদের সাথে মহা রাস-লীলা শুরু করার জন্য প্রস্তুত ছিলেন।
মহা-রাসে যোগদানের তীব্র আকাঙ্ক্ষায় শিব নিধী বনের প্রবেশদ্বারের কাছে যান কিন্তু দ্বার রক্ষী যোগমায়া তাকে থামিয়ে দেন এবং বলেন – কৃষ্ণ ব্যতীত কোনও পুরুষের প্রবেশের অনুমতি নেই। প্রবেশ করতে চাইলে আপনাকে ব্রজের দাসী অর্থাৎ এক গোপীর রূপে থাকতে হবে।
এরপর শিব মানসরোবরের জলে ডুব দেন এবং সেখানে স্নান করার পর ভগবান শিব হ্রদ থেকে সুন্দরী গোপীনীর রূপে আবির্ভূত হন এবং সেই রূপে শ্রী কৃষ্ণের রাস স্থলে গিয়ে তার ভগবানের দর্শন লাভ করেন।
কিন্তু ভগবান অন্তর্যামী এবং তিনি শিবের এই ছদ্মবেশ ধরে ফেললেন এবং বললেন “হে গোপীশ্বর, তোমাকে গোপী রূপে দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি। কিন্তু আপনি জানেন যে এই রস গৃহস্থদের জন্য নয়। অতএব, যেহেতু আপনি অংশগ্রহণ করেছেন এবং আপনার ইচ্ছা পূরণ করেছেন, তাই আমি আপনাকে রাস স্থানের দ্বার পাল নিযুক্ত করলাম এবং আপনি এই স্থানে সর্বদা গোপেশ্বর মহাদেব রূপে বিরাজ করবেন।
আজও শিব শিব তার আরাধ্য হরির ইচ্ছেয় ওই স্থানে গোপেশ্বর রূপে বিরাজমান।
ভগবানের সাথে মিলিত হতে শুদ্ধ ভক্তরা সব কিছু করতে পারেনা এমনকি স্বয়ং মহাদেবও ব্যাতিক্রম নন।
আবার পরের পর্বে ভক্ত এবং ভগবানের আরো একটি লীলা নিয়ে ফিরে আসবো। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।