ভক্তের ভগবান – বাবা লোকনাথের লীলা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
ভক্তদের কাছে বাবা লোকনাথ ব্রহ্মচারী সাক্ষাৎ শিব স্বরূপ। জীবদ্দশায় তিনি যেমন তার ভক্তদের কাছে ছিলেন রক্ত মাংসের ভগবান তিরোধানের পরেও তার মহিমা এতো টুকু কমেনি। তার ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে যেকোনো বিপদ থেকে তাদের আরাধ্য লোকনাথ বাবা তাদের রক্ষা করেন।
সে অনেক কাল আগের কথা। বাবা লোকনাথ তখন বারদীর আশ্রমে থাকেন। তার এক ভক্ত বিজয়কৃষ্ণ গোস্বামী গোস্বামী তখন দেশ ভ্রমণে বেরিয়ে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে কিছু কাল ধ্যান জপ করে কাটাচ্ছিলেন।হটাৎ একদিন সেখানে দাবানলশুরু হয়েছিল।চারদিকে আগুন। পালানোর কোনো পথ নেই। ভক্ত তার ভগবানকে ডাকতে লাগলেন।
তারপর হঠাৎ সেখানে লোকনাথ ব্রহ্মচারী উপস্থিত হয়ে তাঁকে নিয়ে নিরাপদ স্থানে রেখে দিলেন।
বিজয়কৃষ্ণ দেশে ফিরে বারদীতে আসলে বাবা তাঁর সাথে স্নেহের আলিঙ্গন করেন।পরবর্তীতে বাবার আশীষে বিজয়কৃষ্ণ আধ্যাত্মিকতার
আরও উচ্চ স্তরে উপনীত হয়েছিলেন।
নিজের ভক্তদের যেকোনো পরিস্থিতিতে থেকে ক্ষা করতেন বাবা লোকনাথ। একবার বারদীর আশ্রমে কিছু দুষ্কৃতীদের আনাগোনা শুরু হয়।তারা আশ্রমে আসা ভক্তদের নানা ভাবে বিরক্ত এবং লুটপাট করতো।একবার গভীর রাতে তারা আশ্রমবাসীদের অনিষ্ট করার উদ্দেশ্যে আসলে একটি বাঘ গর্জন করতে করতে আশ্রমের দিকে ছুটে আসে। বাঘের ভয়ে তারা পালিয়ে যায় আর বাঘটি ছুটে এসে লোকনাথ বাবার পায়ে লুটিয়ে পড়ে। বাবা তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে সে জঙ্গলে অদৃশ্য হয়।
ভক্তদের প্রতি বাবা লোকনাথ এতটাই স্নেহশীল ছিলেন যে জীবনের শেষদিকে তিনি এক যক্ষ্মা-রোগীর প্রতি করুণা পরবশ হয়ে তার সমস্ত রোগ নিজ দেহে গ্রহণ করেন। ফলে ঐ রোগীটি সুস্থ হয়ে উঠেন এবং বাবার দেহে যক্ষ্মার লক্ষণ দেখা যায়।
ভক্ত এবং ভগবানের সম্পর্ক এমনই হয়। ভক্তের বিপদে ভগবান চুপ করে থাকতে পারেন না। মন থেকে ডাকলে ভগবানের সব বিপদ দুর করেন।
শুধু সম্পূর্ণ রূপে স্মরণনাগত হতে হবে।
ভক্ত এবং ভগবানের এমন অনেক লীলা নিয়ে আলোচনা চলতে থাকবে। ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।