জ্যোতির্লিঙ্গ – ঘৃষ্ণেশ্বর

449

আজ শ্রাবনের দ্বিতীয় সোম বার গোটা দেশ শিবের আরাধোনায় মগ্ন|এই পবিত্র মাসের এই পবিত্র দিনে মহাদেব কে তুষ্ট করে তার কৃপা লাভ করলে কেটে যায় জীবনের অধিকাংশ বাঁধা বিপত্তি|এর আগে আমি এগারোটি জ্যোতির্লিঙ্গর কথা আপনাদের বলেছি|আজ বলবো দ্বাদশতম জ্যোতির্লিঙ্গ ঘৃষ্ণেশ্বরের কথা|

ঘৃষ্ণেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মন্দির বা ঘুশ্মেশ্বর মহারাষ্ট্র রাজ্যের আওরঙ্গাবাদ থেকে ৩০ কিলোমিটার এবং দৌলতাবাদ বা দেবগিরি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ইলোরা গুহার কাছে অবস্থিত|অতি প্রাচীন এই জ্যোতির্লিঙ্গের উল্লেখ পাওয়াযায় শিব পুরানে|

পুরান মতে এই স্থানে ঘুশ্মা নামে এক শিব ভক্ত নারী বাস করতেন শিবের আশীর্বাদে তার এক পুত্র হয়েছিলো যে পুত্রকে পরবর্তীতে চক্রান্ত করে হত্যা করে ঘুশ্মার বোন সুহেদা|ঘুশ্মা বিচলিত না হয়ে শিব সাধনা শুরু করেন ও শিব সন্তুষ্ট হয়ে তার পুত্র কে জীবিত করে দেন|শিব আরেকটি বর দিতে চাইলে ঘুশ্মা তাঁর আরাধ্য দেবতা কে অনুরোধ করেন তিনি যেন চিরকালের জন্য সেই স্থানে বিরাজ করেন|শিব সেই অনুরোধ মেনে নেন|ঘুশ্মার নাম অনুসারে এই জ্যোতির্লিঙ্গের নাম হয় ঘুশ্মাস্বর বা ঘৃষ্ণেশ্বর|

মনে করা হয় বেরুলের শিবভক্ত উপজাতিদের প্রধান ঘৃষ্ণেশ্বরের কৃপায় এখানে গুপ্তধনখুঁজে পেয়েছিলেন। এই টাকায় তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীতে নির্মিত প্রাচীন মন্দিরটির সংস্কার করান ও শিখরসিঙ্গনপুরে একটি হ্রদ প্রতিষ্ঠা করেন|পরবর্তীতে অহল্যাবাই হোলকারও ঘৃষ্ণেশ্বরের মন্দির সংস্কার করিয়েছিলেন|মন্দিরটি লাল পাথরের তৈরি। এতে পাঁচটি চূড়া দেখা যায়।
মন্দিরের উপরে লাল পাথরে দশাবতারের মূর্তি দেখা যায়|চব্বিশটি সুদৃশ্য স্তম্ভ নিয়ে তৈরি হয়েছে দরবার কক্ষটি|মন্দির প্রাঙ্গনে নন্দিকেশ্বরের মূর্তিও আছে|শিবলিঙ্গ এখানে পূর্ব মুখী|প্রায় সারাবছর জনসমাগম হলেও শ্রাবন মাস ও শিব রাত্রি এখানে বিশেষ ভাবে পালিত হয় যা দেখতে দুর দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন|

আজ এখানেই শেষ করছি,তবে আর এক বার বলে রাখি যারা এই শ্রাবন মাসে আধ্যাত্মিক উপায়ে নিজেদের গ্রহ দোষ খণ্ডন করাতে চান তারা আর দেরি না করে যোগাযোগ করুন|দ্রুত ফিরবো এক নতুন এবং ভিন্ন স্বাদের ধারাবাহিক লেখনী নিয়ে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ