আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে বিশেষ পর্ব : শ্রী শ্রী বামা ক্ষ্যাপার শৈশবের অলৌকিক ঘটনা 

137

শিবচতুর্দশীর আর দেরি নেই। শিব চতুর্দশী যেমন আদি শিব লিঙ্গের আবির্ভাব তিথি তেমনই মহান সাধক শ্রী শ্রী বামা ক্ষ্যাপার আবির্ভাব তিথি সেই উপলক্ষে শুরু করেছি তার অলৌকিক জীবন নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা। শ্রী শ্রী বামা ক্ষ্যাপার শৈশব এবং পরবর্তী সাধক জীবন অসংখ্য জনশ্রুতি এবং কিংবদন্তী প্রচলিত আছে।আজকের পর্বে তার শৈশবের একটি বিশেষ ঘটনা নিয়ে লিখবো।

 

কিশোর বামাচরণ একবার আটলা গ্রামের নিজের বাড়ি থেকে তারাপীঠ মহাশ্মশানের দিকে যাচ্ছেন। এই সময় পিছন থেকে তাঁর নাম ধরে শিশুকন্ঠের ডাক। ডাকটি এলো পথের ধারে অবস্থিত চক্রবর্তীর বাড়ির দোতলা থেকে।বামা সেদিকে তাকিয়ে দেখেন বাড়ির দোতলায় জানালার ওপাশে এক দিব্য দর্শন ছেলে দাঁড়িয়ে।

বামা তখন এগিয়ে এসে তাকে পরিচয় জিজ্ঞেস করলে ছেলেটি জবাব দেয়, “আমি এ বাড়ির নারায়ণ। কিন্তু এরা আমাকে জলটুকুও দেয় না। তুই আমাকে নিয়ে চল।” কিন্তু দোতালায় বামা পৌঁছাবেন কিকরে। আবার স্বয়ং নারায়ণ তাকে এই অবস্থা থেকে উদ্ধার করতে বলছেন।

বামার অসহায় অবস্থা বুঝে সেই শিশু নিজেই একটি কাপড় ঝুলিয়ে দিলেন। উপরে উঠে এলেন বামা তারপর সেই শিশু নারায়ণ তাঁর হাতে রুপোয় বাঁধানো একটি শালগ্রাম শিলা ধরিয়ে দিয়ে বললেন, “এক্ষুনি এটা নিয়ে চলে যা।”

 

আদেশ অনুসারে বামা অবিলম্বে সেই শালগ্রাম শিলা নিয়ে চলে আসেন দ্বারকা নদীর পাড়ে।এবং নদীর জলে শালগ্রাম শিলাকে বেশ খানিকক্ষণ ডুবিয়ে রেখে তারপর তাঁকে বালির ওপর শুইয়ে দিয়ে বললেন, “তুমি এবার একটু ঘুমোও, ঠাকুর। আমি আমার বড়মাকে এই বলে বামা চলে গেলেন।তারা পীঠে তারা মায়ের কাছে।

 

চক্রবর্তী বাড়ির নারায়ণ শিলা উধাও হয়েছে এই সংবাদ রটতে দেরি হয়নি গোটা এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজে সবাই প্রায় হাল ছেড়ে দিয়েছে সেই সময়ে কোনো ভাবে বাড়ির কর্তা বামার খবর পায়

ক্ষ্যাপা হিসেবে তার কিছুটা খ্যাতি ছিলই

তাই সবাই ভাবলো এই কাজ তার পক্ষে মোটেই অসম্ভব নয়।

 

সকলে মিলে চড়াও হয় ব্রজবাসী কৈলাসপতির কুটীরে।তার কাছে প্রায় আসে বামা একথা সবার জানা।নিজ কুটিরেই ছিলেন কৈলাশপতি বাবা তিনি ভাবী শিষ্য বামাকে ডেকে জিজ্ঞেস করেন, “এরা যা বলছে, তা কি সত্য?” সবাই বলছিল বামা নারায়ণ শিলা চুরি করে এনেছিলেন। বামা বলেন, “চুরি করতে যাব কেন? এঁদের নারায়ণ নিজেই আমাকে বলেছে, সে সামান্য জলটুকুও পায়না। তাই আমি তাঁকে জল খাওয়াতে নিয়ে এসেছিলাম।

সবাই সব শুনে হতবাক। যে নারায়নের দর্শন পেতে সাধক দের বছরের পর বছর সাধনা করতে হয় তিনি নিজে যে কিশোরের কাছে ধরা দিয়েছেন তিনি নিশ্চই কোনো সাধারণ মানুষ নয়। একথা সবাই সেদিন উপলব্ধি করেছিলেন।

 

সারা জীবনে বামা ক্ষ্যাপা অসংখ্য অলৌকিক ঘটনা ঘটিয়েছেন। তার কিছু নিয়ে আলোচনা হবে

সারা সপ্তাহ ধরে। পড়তে থাকুন।

ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।