পশ্চিমবঙ্গর প্রতিবেশী রাজ্য ত্রিপুরায়
মাতাবাড়ি গ্রামে ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দির অবস্থিত।
সতীর একান্ন শক্তিপীঠের মধ্যে এটি অন্যতম।
আজকের একান্ন পীঠ পর্বে ত্রিপুরা সুন্দরী বা ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির নিয়ে লিখবো ।
শাস্ত্র মতে দেবী সতীর ডান পা এই স্থানে পতিত হয়েছিল। দেবী সতীকে এই মন্দিরে ত্রিপুরা সুন্দরী বা ত্রিপুরেশ্বরী হিসাবে পুজো করা হয়।
মধ্যযুগে মহারাজা ধন্য মানিক্য দেবীর স্বপ্নাদেশের পর চট্টগ্রাম থেকে দেবী বিগ্রহ নিয়ে এসে মাতাবাড়ির একটি ছোট পাহাড়ের উপর স্থাপন করেন।
এই মন্দিরের গর্ভগৃহে দুটি দেবীমূর্তি রয়েছে।
পাঁচ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট মূর্তিটি ত্রিপুরাসুন্দরী নামে পরিচিত এবং দু ফুট লম্বা ছোট মূর্তিটিকে ছোটমা বা চন্ডীমাতা বলা হয় ।ত্রিপুরেশ্বরী মন্দিরে দেবী মূর্তির পাশাপাশি নারায়ণ শিলা রয়েছে।
ভারতের স্বাধীনতার পর ত্রিপুরা রাজ্যর ভারতে অন্তর্ভুক্তির সময় ত্রিপুরার তৎকালীন রানী কাঞ্চন প্রভাদেবীর অন্যতম শর্ত ছিল ত্রিপুরাসুন্দরী দেবীর মন্দিরের পরিচালনার ভার সরকারকে নিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার শর্তে রাজি হয়। এরপরই রাজ্য সরকার ত্রিপুরা সুন্দরী মন্দিরের পরিচালনার দায়িত্ব নেয়।বিশেষ বিশেষ তিথিতে পুজোর সময়
রাজ পরিবারের সদস্যদের অর্ঘ্য আহুতি দিতে হয়।
ত্রিপুরেশ্বরী মন্দির চত্বরে থাকা কল্যাণ সাগর এই শক্তি পীঠের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এই দিঘিতে আছে প্রচুর পরিমাণে কচ্ছপ।এই দীঘিকে খুবই পবিত্র মনে করা হয় এবং ভক্তরা বিশ্বাস করেন এই দীঘির কচ্ছপদের খেতে দিলে তাদের মনোস্কামনা পূর্ণ হবে।
শক্তি পীঠ ত্রিপুরাসুন্দরীকে ‘কূর্ম পীঠ’ ও বলা হয়। অনেকে মনে করেন এই কল্যাণ সাগরের কচ্ছপদের উপস্থিতির জন্যই এইরুপ নাম আবার অনেকে বিশ্বাস করেন যেখানে মন্দির অবস্থিত সেই পাহাড়ের আকৃতি ঠিক কচ্ছপের মত ছিল বলে এই শক্তিপীঠের নামকরণ করা হয় কুর্ম পীঠ।
এখনো অনেকগুলি শক্তিপীঠ নিয়ে আলোচনা বাকি আছে। পরবর্তী শক্তিপীঠ নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।