শিব লিঙ্গের রহস্য

284

শিব হলেন, সর্বোচ্চ স্তরে, সর্বোৎকর্ষ, অপরিবর্তনশীল পরম ব্রহ্ম ।একদিকে যেমন শিবের অনেকগুলি সদাশয় ও ভয়ঙ্কর মূর্তিও আছে। আবার তিনি একজন সর্বজ্ঞ যোগী স্বর্ব ত্যাগী সন্যাসী । তিনি কৈলাস পর্বতে সন্ন্যাসীর জীবন যাপন করেন।আবার গৃহস্থ রূপে তিনি পার্বতীর স্বামী। শিব লিঙ্গের ও নিজস্ব ব্যাখ্যা আছে আজ শিব লিঙ্গের রহস্য জানবো। শেষে থাকবে শিব লিঙ্গ সংক্রান্ত কিছু বিধি নিষেধ।শিব পূরাণ মতে এক সময় ভগবান বিষ্ণু এবং ব্রহ্মার মধ্যে নিজেদের শ্রেষ্টত্ত প্রমান করার জন্য বিবাদ দেখা দিয়েছিল। লড়াই প্রায় বাঁধে বাঁধে। সেই সময় দুই দেবাতার মাঝে আর্বিভাব হয় আদি শিব লিঙ্গএই স্তম্ভ হঠাৎ করে এল কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর।এর শুরু ও শেষ কোথায় তা খুঁজতে ব্রহ্মা ঠিক করেন পিলারের উপরের দিকে গিয়ে দেখবেন কোথায় এর শেষ, আর বিষ্ণু দেব যাবেন নিচের দিকে এর শুরু কোথায়।দুজনেই ব্যার্থ হয়। কারন আদি শিব লিঙ্গ আদি ও অন্ত হীন।তাই শিব দেবতাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং দেবতাদের আরাধ্য।আবার তিনি পরম বৈষ্ণব এবং সদা হরির ধ্যানে তিনি মগ্ন থাকেন।শিব লিঙ্গের মধ্যে উপস্থিত রয়েছে এ জগতের অনন্ত শক্তি। আর এত মাত্রায় শক্তি যেখানে মজুত রয়েছে তাকে ঠান্ডা রাখতে না পারলে যে বিপদ! আর ঠিক এই কারণেই শিব লিঙ্গের মাথায় জল ঢালার প্রথা শুরু হয়। যেখানে অনন্ত শক্তি বিরাজমান সেই শক্তির উৎস স্থান কে ঠান্ডা রাখা, শান্ত রাখাই মূল উদেশ্য।আবার সমুদ্র মন্থন কালে বিষ পান করার পরে দেবতারা মহাদেবকে বেলপত্র খাওয়ান কেননা বেলপত্র বিষের প্রভাবকে কম করে দেয়। শিব লিঙ্গ মানে ‘শিবের আবাস’ মানে, বাসস্থান। অর্থাত্‍ শিবঠাকুর যেখানে বাস করেন বা বিরাজ করেন। শিবের মাথায় জল ঢালার পর যে যে স্থান দিয়ে জল প্রবাহিত হয়ে যায় সেটা পার্বতীর পিঠ। পুরাণ মতে জ্ঞাণের বিকাশ হয় শক্তির পিঠের উপর। শিব লিঙ্গে যে তিনটি দাগ থাকে তা আসলে ত্রিপুন্ড বা শিবের মাথার তিলক যা প্রত্যেক শৈব্যর মাথায় ও বিরাজমান।এবার আসি বিধি নিষেধের দিকে।বাড়িতে শিব লিঙ্গ রাখলে তার উচ্চতা খুব কম হওয়া উচিৎ। ঈশান কোনে শিব লিঙ্গ রাখুন এবং শিবলিঙ্গের বেদীর মুখ উত্তর দিকে হওয়া উচিত।গৃহে একের বেশি শিবলিঙ্গ একসাথে রাখা উচিৎ নয়।পাথরে পরিবর্তে ধাতুর শিব লিঙ্গ গৃহের জন্য বেশি শুভ।শ্রাবন মাস জুড়ে চলতে থাকবে শিব নিয়ে আলোচনা আগামী পর্বে আবার কোনো নতুন বিষয় নিয়ে আসবো আপনাদে সামনে। থাকবে শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।