গুরু কথা – শ্রী শ্রী রাম ঠাকুরের অলৌকিক জীবন

1158

গুরু পূর্ণিমা উপলক্ষে আমার এই ধারাবাহিক পর্বগুলি আপনাদের ভালো লাগছে জেনে আনন্দ পাচ্ছি। কারন আপনাদের জন্যই আমার এই বিশেষ উপস্থাপনা।আজ যে অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন প্রকৃত গুরুর কথা আপনাদের জানাবো।তিনি শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর যার সন্যাসজীবনের পূর্বের নাম ছিলো রাম চন্দ্র চক্রবর্তী|পরাধীন ভারতে ১৮৬০সালে বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলয় শ্রীঁরাধামাধব চক্রবর্তী ও শ্রীমতি কমলাদেবীর সন্তান হিসাবে শ্রীশ্রী রামঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন|রাম ঠাকুরের আরেক যমজ ভাই ছিলো তার নাম ছিলো লক্ষণ|তাদের পারিবারিক গুরু ছিলেন শ্রীঁমৃত্যুঞ্জয় ন্যায়পঞ্চানন|বালক রামচন্দ্র শৈশব থেকেই আধ্যাত্মিক চেতনার অধিকারী ছিলেন|শাস্ত্রে তার খুব আগ্রহ ছিলো মাঝে মাঝেই ঈশ্বর চিন্তা করে তিনি ভাব তন্ময় হয়ে যেতেন |ঈশ্বরে কে কেন্দ্র করে নানা আধ্যাত্মিক প্রশ্ন তার মনে ঘুরপাক খেতো এই ঈশ্বরের খোঁজেই ১৮৭২ সালে সকলের অজ্ঞাতে অজানাকে জানার লক্ষ্যে গৃহত্যাগী হন|পরে পৌঁছান পৌঁছালেন আসামের শ্রীশ্রী কামাক্ষ্যাদেবীর মন্দিরে এবং এক অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শ্রীশ্রী রামঠাকুর দেখেন জটাধারী, দীর্ঘাঙ্গী এক জ্যোতির্ময় মহাপুরুষ সামনে দাঁড়িয়ে|গুরু হিসাবে তিনি সেই দিব্য পুরুষ কে গ্রহন করলেন শুরু হলো তার সাধনা ও আধ্যাত্মিক যাত্রা|কঠিন সাধনায় একসময় তিনি হয়ে উঠলেন অলৌকিক ক্ষমতা সম্পন্ন রাম ঠাকুর অষ্টসিদ্ধি লাভ করলেন তিনি |বহু অলৌকিক ঘটনা তিনি ঘটিয়েছেন তার জীবদ্দশায় যার মধ্যে দুটি ঘটনা আজ আপনাদের বলবো।একবার ঠাকুর কলকাতায় এক ডাক্তার ভক্তের বাড়িতে ছিলেন। একদিন সকালে তাঁর বৈঠকখানার ঘরে তিনি, ঠাকুর এবং সেই সময়ের বিখ্যাত কবিরাজ জানকীনাথ দাশগুপ্ত বসে আছেন। ঠাকুর তাঁদের ধর্মের শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা শোনাচ্ছিলেন। হঠাৎ দেখা গেল, ঠাকুরের হাতে ছোট ছোট গুটি বেরোতে শুরু করল। ক্রমে সেই গুটি তাঁর সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ল। কবিরাজ জানকীনাথ দেখামাত্র বুঝতে পারলেন যে ওগুলো গুটিবসন্ত। সবাইক আতঙ্কিত। ঠাকুর হেসে বললেন ভয় পাওয়ার কিছু নেই, এর জন্য ওষুধের প্রয়োজন হবে না’। এই কথা বলে ঠাকুর সেই গুটিগুলোকে এক এক করে টিপে টিপে বসিয়ে দিতে লাগলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সেই সব গুটি ঠাকুরের গা থেকে ম্যাজিকের মতো মিলিয়ে গেল। ঠাকুর বললেন, ‘এ রোগ আমার নয়, অনেকদিন আগে আমার এক ভক্তের গুটিবসন্ত হয়েছিল। সে দিন তাঁকে পরিচর্যা করে যমের কাছ থেকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। যম ছেড়ে দিলেও রোগ কি ছাড়ে, সেই ভক্তের রোগ আজ আমাকে ভোগালেও মারতে পারল না’একবার ভক্ত রোহিনী বাবুর বাড়িতে এসেছেন ঠাকুর।সৎসঙ্গ শেষ করে খাওয়ার সময় ঠাকুর বললেন যে তিনি মাংস খাবেন। উপস্থিত সকলে চমকে উঠলেন। যে মানুষটা সারা দিনে একটা ফলও খায় না, সে আজ মাংস খেতে চাইছে! রোহিণীবাবু উল্লসিত, তাঁর বাড়িতে পরমপুরুষ শ্রী রামঠাকুর মাংস খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।অবাক কান্ড তো বটেই এ তাঁর পরম সৌভাগ্য। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ঠাকুরকে এক বাটি মাংস এনে দিলেন। মুহূর্তের মধ্যে সেই মাংস খেয়ে নিয়ে ঠাকুর বললেন, ‘আরও মাংস নিয়ে এসো, তোমাদের কাছে যা আছে সব নিয়ে এসো’।সেই রাতে বাড়ির সব রান্না করা মাংস খেয়ে শেষ করেছিলেন ঠাকুর।সেই রাতে ঠাকুরের পেটে অসহ্য ব্যথা হয়। চিকিৎসা হওয়ার পর জানা যায় তার মাংসে বিষ ছিলো। বাড়ির লোক এবং পশু পাখিদের রক্ষা করতে তিনি বিষ নিজে খেয়েছেন।যদিও সেই বিষ শরীরে ধারণ করেও তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন।আজকের পর্ব এখানেই শেষ করলাম।পরের পর্বে আবার অন্য কোনো গুরুর কথা নিয়েফিরে আসবো। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।