সাধারণত অম্বুবাচিতে দেবী পুজো নিষিদ্ধ তবে অম্বুবাচি নিবৃত্তির পর যখন শাস্ত্র মতে হোম যজ্ঞ ও দেবী আরাধনার আয়োজন করা হয় সেই সময়ে তন্ত্র মতে গ্রহের প্রতিকার ও হয় এবং সেই তিথি গ্রহ দোষ খণ্ডন ও বিভিন্ন তান্ত্রিক উপাচারের জন্য আদৰ্শ বলে ধরা হয়।আর মাত্র কয়েকটি দিন পরেই অম্বুবাচি। সারা দেশের মাতৃ মন্দির গুলিতে পরিলক্ষিত হবে কিছু বিশেষ রীতি নীতি। আমিও আমার এই অনুষ্ঠানে তাই দেবী মাহাত্ম নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি অম্বুবাচি নিয়ে কিছু লিখবো । যাই হোক শুরু করাযাক আজকের দেবী মাহাত্ম পর্ব।বাংলার কালী পুজো বেশ বৈচিত্র পূর্ণ। অনেক অলৌকিক ঘটনা ও প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী একেকটা কালী ক্ষেত্র। আজ এমন দুটি কালী পুজোর কথা লিখবো যেখানে দুটি বা জোড়া কালী মূর্তি একত্রে পূজিত হয়। আমতায় দুই কালী মূর্তি দুই বোন রূপে একসাথে পূজিতা হয়ে আসছেন বহু বছর ধরে। একজন মা ভদ্রকালী ও অন্যজন মা বিমলা। স্থানীয় এক বনেদি পরিবারের কুলদেবী এই জোড়া কালী।শোনা যায় প্রায় তিনশ বছর আগে এই পরিবারের এক বৃদ্ধা পাশ্ববর্তী নদীতে স্নান করতে গিয়েছিলেন এবং স্নানের পর তার দুই হাত ধরে নাকি দুই মা নদী থেকে উঠেছিলেন।এই মন্দিরে ডানদিকের বড়ো মা বা বড়ো বোন হলেন ভদ্রকালী আর তাঁর পাশে ছোট বোন হচ্ছেন মা বিমলা।মা এর মন্দিরে মূল অনুষ্ঠান হয় প্রতিবৎসরের ফাল্গুনের প্রথম শনিবার।এখানে দেবীর প্রিয় ভোগ মাছ পোড়া আর ভেড়ার মাংস। তাই দিয়েই হয় পুজো এবং প্রসাদ ও বিতরণ করা হয়।দ্বিতীয় জোড়া কালীর পুজোটি হয় বর্ধমানের কাটোয়ায়। সেখানে শর্মা পরিবার এক কালে ছিলো বাংলার নবাবদের স্নেহধন্য।এই পরিবারের এক সদস্য স্বপ্নাদেশ পেয়ে সাড়ে তিনশো বছর আগে কালীপুজো শুরু করেন। প্রথমে একটি মূর্তি পুজো হত। তারপর পরিবার ভাগ হওয়ার পর পারিবারিক অশান্তির জেরে একবছর পৃথকভাবে এক সদস্য কালীপুজো শুরু করেন। তখনই ঘটে বেশ কিছু অলৌকিক ঘটনা শোনা যায় একের পর এক বিপদ আসতে থাকে পরিবারে। তারপর একরাতে দেবী স্বপ্নাদেশে নাকি জানিয়েছিলেন একই বেদিতে জোড়া প্রতিমার পুজো করতে হবে। তখন থেকেই একই মন্দিরে জোড়া প্রতিমার পুজো হয়ে আসছে।আগে বলী প্রথা থাহলেও একবার অদ্ভুত ভাবে বলী প্রদত্ত মাংস থেকে কটু গন্ধ বের হওয়ার ফলে কুলো পুরোহিত বিধান দেন যে মা আর বলী চাননা তাই বন্ধ হয় বলী।বর্তমানে বৈষ্ণব মতে পুজো হয়।দেবী মাহাত্ম নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্ব গুলিতে । সঙ্গে থাকবে অম্বুবাচি নিয়ে অনেক তথ্য।এবং মন্দির রহস্য। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।