নেপাল ভ্রমণ: পোখরার কিছু দর্শনীয় স্থান

574

গতকালের মনোস্কামনা মন্দির দর্শন দৈহিক ভাবে কিছুটা ক্লান্তি এনেছিল কারন দুর্গম ও প্রতিকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ পদে পদে শক্তির পরীক্ষা নেয়|তবে নেপালের সৌন্দর্য এতটাই মনোরম ও মায়াবী যে ক্লান্তি নিমেষে দূর হয়ে যায় আবার নতুন গন্তব্য হাত ছানি দিয়ে ডাকে|আজকের গন্তব্য পোখরা, এই পোখরা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিমি পশ্চিমে অবস্থিত এবং নেপালের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ শহর|ভারতে যেমন কাশ্মীরকে ভুস্বর্গ বলা হয় তেমনই “নেপালের ভূস্বর্গ” বলা হয় এই পোখরাকে|দেখার মতো অসংখ্য ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় স্থান রয়েছে পোখরায়….প্রথমে বলবো ডেভিস ফলসের কথা যা পোখারার অন্যতম আকর্ষন। ছোট একটি ঝর্ণার নাম ডেভিস ফলস। বহুকাল আগে এক দম্পতি ঝর্নায় নেমে স্নান করছিল। সেই সময়ে জলের তোড়ে ভেসে যান ওই মহিলা পর্যটক এবং কিছুদিন পর তার মৃত দেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তিতে নেপাল সরকার মৃত ট্যুরিস্টের নামে ঝর্ণার নাম রাখে ডেভিস ফলস|পাহাড়ি এই ঝর্ণা বেশ সুন্দর এবং মনোরম|ডেভিস ফল উল্টো দিকেই রয়েছে মহেন্দ্র গুহাটি মৃত রাজা মহেন্দ্র বির বিক্রম শাহাদেবের নামে নামাঙ্কিত|নেপাল রাজ পরিবার বরাবরই পরম শিব ভক্ত এবং তাদের অনুপ্রেরণায় গুহার ভিতরে মহাদেবের মুর্তি স্থাপন করা হয়|গুহার অভ্যন্তরের প্রাকৃতিক নিস্তব্ধতা|অন্ধকার ও বাদুড়ের ডানা এবং জলপ্রবাহের শব্দ বেশ গা ছম ছমে পরিবেশ সৃষ্টি করে|পোখরা ভ্রমন অসম্পূর্ন থেকে যাবে বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির না দেখলে পোখরা অঞ্চলে বসবাসকারী হিন্দুদের কাছে অত্যন্ত ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে এই মন্দিরটি দেবী দুর্গাকে উত্সর্গীকৃত, যিনি পোখারার নির্বাচিত অভিভাবিকা|বিন্ধ্যবাসিনী মন্দিরটি 1845 খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং প্রতিষ্ঠার পর থেকে ভগবতী এখানে প্রতিদিন পূজিতা হয়ে আসছে।আজও পশু বলি হয় এবং সাধারণত শনিবার এবং মঙ্গলবার বেছে নেয়া হয় বলীর জন্য|পোখরা সম্পর্কে বলতে গেলে আরো একটি গুহার কথা বলতেই হয়|ডেভিস ফলস এর বিপরীতে রয়েছে গুপ্তেশ্বর গুহা ডেভিস ফলসের জল এই গুহার মধ্য দিয়ে যায়।এখানেই স্বেতি নদী ভূগর্ভ থেকে বের হয়েছে। গুহা মন্দিরটি 16 শতকের দিকে আবিষ্কৃত হয় । স্বয়ং শিব রয়েছেন এই গুহায়|প্রায় 3 কিমি দীর্ঘ এই গুহা পোখরার অন্যতম আকর্ষণ|পোখরা আরো একবার মুগ্ধ করলো তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও বৈচিত্র দিয়ে|দেখা যাক আর কি কি অপেক্ষা করে আছে পরবর্তী পর্বে|পড়তে থাকুন|সঙ্গে থাকুন|ধন্যবাদ|