অম্বুবাচির প্রকৃত অর্থ
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
অম্বুবাচি নিয়ে বিগত সপ্তাহে বিভিন্ন আঙ্গিকে আলোচনা করেছি জানিয়েছি তার শাস্ত্রীয় এবং আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা এবং বিধিনিষেধ।
বলেছি অম্বুবাচী মেলার কথা।আজ অম্বুবাচী পরবর্তী এই পবিত্র সময়ে জানাবো অম্বুবাচির প্রকৃত বা অন্তর নিহিত অর্থ।
অম্বুবাচীর সময়ে কৃষকরা কৃষি কাজ থেকে বিরত থাকেন ও ধরিত্রী কে বিশ্রাম দেন|আবার অম্বুবাচী
উপলক্ষে উড়িষ্যায় ভূদেবীর বিশেষ পূজা মেলা ও উৎসবের আয়োজন করা হয় ও ব্যাপক জন সমাগম হয়|ভূদেবী কে উড়িষ্যায় স্বয়ং জগন্নাথ দেবের স্ত্রী হিসেবে কল্পনা করা হয় এবং তার ঋতুমতী হওয়ার সময় কাল কে চারদিনের রজ উৎসব হিসেবে পালন করা হয়|
পুরানে পৃথিবীকে নানা রূপে দেখানো হয়েছে।
শাস্ত্র মতে তিনি কশ্যপ প্রজাপতির কন্যা ভূদেবী। আবার রামায়ণে তিনি সীতার মা। অন্য একটি পৌরাণিক ব্যাখ্যা অনুসারে দ্বাপরযুগে কৃষ্ণের স্ত্রী সত্যভামা রূপে এই ভুদেবী জন্মেছিলেন।আবার বরাহ অবতারে এই বসুন্ধরাকেই অতল সাগর থেকে রক্ষা করেছিলেন স্বয়ং বিষ্ণু।ধরিত্রী জড় বস্তু নয় তিনি দেবী রূপে পূজিতা হন এবং সৃষ্টি শক্তির আধার।
অম্বু বাচীতে উড়িষ্যায় চারদিনের উৎসব কে চারটি আলাদা পর্যায় উদযাপন করা হয় প্রথম দিনকে বলা হয় পহিলি রজ। দ্বিতীয় দিন মিথুন সংক্রান্তি| তৃতীয় দিন ভূদহ বা বাসি রজ এবং চতুর্থ দিন বসুমতী স্নান।
সনাতন ধর্মে চন্দ্র সূর্য বায়ু পর্বত বা গঙ্গা যেমন দেবতা বা দেবী রূপে পূজিত হন তেমনই প্রকৃতি
এখানে দেবীর মর্যাদা পায়। যে প্রকৃতি আমাদের খাদ্য দেয় অক্সিজেন দেয় জল দেয় সেই প্রকৃতিকে মাতৃ শক্তি রূপে পুজো করা এবং তার জীবনের একটি বিশেষ পর্যায়কে সন্মান জানানোই অম্বুবাচির প্রকৃত উদ্দেশ্য।
আগামী কাল রথ যাত্রা উপলক্ষে বিশেষ পর্ব নিয়ে আবার ফিরে আসবো। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।