অম্বুবাচী এবং মহা পীঠ কামাখ্যা

47

অম্বুবাচী এবং মহা পীঠ কামাখ্যা

 

পন্ডিতজি ভৃগুর শ্রী জাতক

 

প্রতি বছর অম্বুবাচী উপলক্ষে আসামের কামাখ্যায় দেশের সর্ব বৃহৎ উৎসবটি আয়োজন করা হয় যা অম্বুবাচী মেলা নামে প্রসিদ্ধ|সে নিয়ে পরে আলোচনা করবো।আজ জানবো শক্তি পীঠ কামাখ্যা ও তার সাথে জড়িয়ে থাকা অম্বুবাচী সংক্রান্ত নানা প্রথা, কিংবদন্তি ও তার আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা।

 

কামরূপ হচ্ছে তীর্থচূড়ামণি। তীর্থচূড়ামনির অর্থ হলো সব তীর্থের মধ্যে সেরা তীর্থ স্থান। যেখানে সতীর যোনি মন্ডল পতিত হয়েছিল সেই জায়গাটাকে বলে কুব্জিকাপীঠ। কথিত আছে যোনিরূপ যে প্রস্তরখণ্ডে মা কামাক্ষা অবস্থান করছেন সেই শিলা স্পর্শ করলে মানুষ মুক্তিলাভ করে।

 

পুরান অনুসারে স্বয়ং কাম দেব এই সতী পীঠ আবিষ্কার করেন এবং দেবীর পুজো করে শাপমুক্ত হন এবং নিজের হারানো রূপ যৌবন ফিরে পান।

তার নামে স্থানটির নাম হয় কামরুপ।

শাস্ত্র মতে যেহেতু দেবী সতীর গৰ্ভ ও যোনি পতিত হয়েছিল এই স্থানে এই কারণে এই দেবীকে অনেকে উর্বরতার দেবী বা রক্ত ক্ষরণ কারী দেবীও বলে থাকেন তাই স্বাভাবিক ভাবেই অম্বুবাচী যা দেবীর ঋতু মতি হওয়ার উৎসব এই স্থানে সর্বাধিক গুরুত্ব সহকারে পালন হয়|

 

অম্বুবাচির সময়ে বিশেষ কিছু প্রথা পালন করা হয় এখানে অম্বুবাচীর দিন থেকে পরবর্তী তিন দিন দেবীর মন্দির বন্ধ থাকে|এই সময় দেবীর দর্শন নিষিদ্ধ|এই সময়ে একটি লাল কাপড় দিয়ে

দেবীকে ঢেকে রাখা হয় ভক্তরা মন্দিরের বাইরে থেকে দেবীকে প্রনাম করেন ও নিজের মনোস্কামনা ব্যক্ত করেন|শোনা যায় নিয়ম অমান্য করে এই সময়ে মন্দিরে ঢুকলে অপুরণীয় ক্ষতি হয়।

 

অম্বুবাচীর চতুর্থ দিন থেকে দেবীর স্নান এর পর তার দর্শন ও স্বাভাবিক পূজা প্রক্রিয়া পুনরায় আরম্ভ হয়|এই পরম্পরা অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে যুগ যুগ ধরে পালিত হয়ে আসছে|অম্বুবাচী নিবৃত্তির পর দেবীর রক্ত বস্ত্র ভক্ত দের মধ্যে দান করা হয়, প্রচলিত বিশ্বাস মতে এই রক্ত বস্ত্র লাভ করলে জীবনের অনেক সমস্যা দুর হয় ও বহু মনোস্কামনা পূর্ন হয়|

 

এই শক্তি পীঠে দশমহাবিদ্যার মন্দিরও বিদ্যমান।তাই নব গ্রহের প্রতিকারের জন্য অনেকেই এই স্থান নির্বাচন করেন।তাছাড়া তন্ত্র মন্ত্র এবং নানা বিধ গুপ্ত বিদ্যার জন্য কামাখ্যা চিরকাল বিখ্যাত।

 

সারা সপ্তাহ ধরে চলত থাকবে অম্বুবাচি নিয়ে আলোচনা। ফিরে আসবো আগামী পর্বে।

পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।