রথযাত্রার শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন

11

রথযাত্রার শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ পবিত্র রথযাত্রা মনে করা হয় দীর্ঘ বিরতির পর শ্রী কৃষ্ণর বৃন্দাবন যাত্রাকেই উদযাপন করা হয় রথ যাত্রা পালনের মাধ্যমে|

 

পুরীতে আজ জগন্নাথ দেব তার রাজকীয় রথে করে পথে নামেন তার অগণিত ভক্তদের দর্শন দিতে।এই রথ যাত্রার এক সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে।প্রথমে রাজ পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় ও পরবর্তীতে সরকার জনসাধারণএর উদ্যোগে প্রতি বছর পুরীতে ওই বিশেষ তিথী তে বিরাট আকারে পালিত হয় রথ যাত্রা|

 

এই পরম্পরা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে|

বোন সুভদ্রা ও দাদা বলরাম বা বলভদ্রকে নিয়ে রথে চড়ে রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নের পত্নী গুন্ডিচারবাড়ি যান জগন্নাথদেব। সেখান থেকে সাতদিন পরে আবার নিজের মন্দিরে ফিরে আসেন।

 

রথের দিন তিনটি রথ পর পর যাত্রা করে মাসির বাড়ি। প্রথমে যায় বলরামের রথ, তারপর সুভদ্রা এবং সবশেষে জগন্নাথের রথ। রথে চড়ে এই গমন ও প্রত্যাগমনকে সোজা রথ এবং উল্টোরথ বলে|তিনটি রথের প্রত্যেকের নিজস্ব বৈশিষ্ট আছে|জগন্নাথের রথের নাম নন্দী ঘোষ, বলরামের রথের নাম তালধ্বজ ও সুভদ্রার রথের নাম দর্পদলন।আজও পুরীর বর্তমান রাজা সোনার ঝাড়ু ব্যবহার করে রথের যাত্রার আগে তার পথ পরিষ্কার করে থাকেন|

 

শ্রীচৈতন্যদেবের নীলাচল অর্থাৎ পুরী যাওয়ার পর থেকে বাংলায় রথ যাত্রার জনপ্রিয়তা বাড়ে।চৈতন্যভক্ত বৈষ্ণবরা বাংলায় পুরীর অনুকরণে রথযাত্রার শুরু করেন এবং দেখতে দেখতে বহু রাজপরিবার ও এই মহা সমারোহে এই উৎসব পালন করতে শুরু করে|আরো কিছু কাল পরে ইসকন ও শ্রীল প্রভুপাদের হাত ধরে রথ যাত্রা দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতে পা রাখে ও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে সারা বিশ্ব জুড়ে|

এবছর থেকে দিঘার নব নির্মিত জগন্নাথ ধামের রথ যাত্রা পালনের মাধ্যমে বাংলার রথ

যাত্রা উৎসব নিঃসন্দেহে অন্য মাত্রা পেলো।

 

পবিত্র রথ যাত্রা যেকোনো শুভ শাস্ত্রীয় বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সূচনার পবিত্র দিন হিসেবে গণ্য করা হয়| বাঙালির অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব দূর্গাপূজোর সূচনাও হয় এই রথ কিংবা উল্টোরথের দিন|

 

আজ আপনাদের সবাইকে জানাই পবিত্র

এই রথ যাত্রার অসংখ্য শুভেচ্ছা এবং

অভিনন্দন। জয় জগন্নাথ।রথ যাত্রা সংক্রান্ত আরো অনেক তথ্য এবং আলোচনা নিয়ে আবার ফিরে আসবো আগামী সময়ে ধারাবাহিক ভাবে।

পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।