আপনাদের নবনির্মিত মা হৃদয়েস্বরী সর্বমঙ্গলা মন্দিরের এবছর ছিলো প্রথম দূর্গা পুজা তাই উৎসাহ এবং উদ্দীপনা ছিলো একটু বেশি|
পাশাপাশি আপনাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতা ছিলো প্রত্যাশা মতো সব মিলিয়ে পুজো সুন্দর ও সার্থক ভাবে সম্পন্ন|তবে সব ভালো কিছুরই শেষ থাকে সেই নিয়ম মেনে আজ অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হবে বিজয়ার মধ্যে দিয়ে|তাই আজ আমাদের সবারই মন কম বেশি খারাপ, কারন আজ বিজয়া দশমী|আজ দেবী দুর্গার বিসর্জনের দিন|মা ফিরে যাবেন কৈলাশে|তারপর আবার এক বছরের প্রতীক্ষা|তবে প্রকৃত অর্থে কিন্তু আজ দুক্ষের দিন নয়, আজ গৌরবের দিন|অন্তত শাস্ত্র তাই বলছে|
আসুন জেনে নিই এই দিন সম্পর্কে আমাদের সনাতন ধর্ম শাস্ত্র ঠিক কি বলছে|বিজয়া ও দশমী এই দুই শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে সব প্রশ্নের উত্তর ও শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা|আশ্বিন মাসের শুক্ল পক্ষের দশমী তিথিতে পিতৃ গৃহ ছেড়ে কৈলাসে স্বামীগৃহে পাড়ি দেন দেবী|তাই দশমী শব্দটি ব্যবহিত হয়|এবার যদি বিজয়া শব্দটির বিশ্লেষণ করি তাহলে দেখা যাবে পুরান অনুসারে নয় দিন ও নয় রাত্রি যুদ্ধ করার পর দশম দিনে দেবী মহিষাসুরকে বধ করে বিজয় লাভ করেন|অর্থাৎ বিজয়া রূপে আত্মপ্রকাশ করেন|তাই এই দিন টি বিজয়া দশমী রূপে চিহ্নিত হয়|
মহিষাসুর বধের পর দেবতাদের আলিঙ্গন থেকেই কোলাকুলি বা আলিঙ্গন করার সূচনা হয়|আর যেকোনো শুভ কাজ সফল ভাবে সম্পন্ন হলে মিষ্টি মুখতো থাকবেই|আবার উত্তর ও মধ্য ভারতে এই দিনে দশেরা উদযাপিত হয়|’দশেরা’ শব্দটির উৎপত্তি সংস্কৃত শব্দ ‘দশহর’ থেকে এবং এখানে মূলত রাম কতৃক দশানন রাবন বোধের দিনটিকে উদযাপন করা হয়|বাল্মীকি রামায়ণ অনুসারে আশ্বিন মাসের শুক্লা দশমী তিথিতেই লঙ্কেশ্বর রাবণকে বধ করেছিলেন রাম ওই দিনটাই দশেরা এবং আশ্বিন মাসের ৩০ তম দিনে যে দিন অযোধ্যা প্রত্যাবর্তন করেন রাম সেদিনটি দীপাবলি রূপে পালিত হয়|অর্থাৎ এই দিন টা যথার্থ অর্থেই গৌরবের|তাই হয় তো স্নেহের আলিঙ্গন এবং মিষ্টি বিতরণের প্রচলন|তবু মন খারাপ থাকতেই পারে কারন নয় দিন ব্যাপী উৎসবের আজ সমাপ্তি|তবে দীপাবলি আসছে, আলোর উৎসবে আবার মেতে উঠবে দেশ|জ্যোতিষ ও তন্ত্র জগতের ক্ষেত্রে সর্ব শ্রেষ্ট সময় দীপান্বিতা অমাবস্যা আর কদিন পরেই|সে নিয়ে বলবো যথা সময়ে|সবাইকে শুভ বিজয়া|ভালো থাকুন|পড়তে থাকুন|ধন্যবাদ|