দেবী দুর্গার কৈলাশ এ প্রত্যাবর্তন ঘটেছে তবে আগামীকাল লক্ষী পুজো|আমরা সবাই তার আরাধনা করবো নিজের মতো করে|আসুন আজ জেনে নিই দেবী লক্ষীর পুজোয় কি করবেন কি করবেন না|আপনারা পুজোর দিন অন্ন বা যেকোনও খাবার নষ্ট করবেন না। এতে মা অসন্তুষ্ট হন। দেবী লক্ষ্মী অন্নের অপচয় সহ্য করেন না। ফলে বাড়িতে অর্থ ও খাবারের অভাব দেখা দিতে পারে। এই দিনে সম্ভব হলে অন্ন দান করুন|পুজোর ক্ষেত্রে লক্ষ্মী দেবীকে কোনও ভাবে সাদা রঙের ফুল দিয়ে পুজো করা যাবে না। সাদা রঙ ছাড়া লাল, হলুদ, গোলাপি রঙের ফুল ব্যবহার করা যাবে।লক্ষ্মীপুজো করার সময় কোনওভাবেই কালো পোশাক পরা যাবে না। কারন সাদা ও কালো রঙ দেবী পছন্দ করেননা তার প্ৰিয় রঙ হলুদ ও লাল|মা লক্ষ্মীর পুজোয় সাদা ফুল যেমন ব্যবহার করা যায় না, তেমনই আসনে সাদা বা কালো কাপড় পাতার নিয়ম নেই। ব্যবহার করা যেতে পারে লাল, গোলাপি প্রভৃতি রঙের কাপড়। বিশ্বাস, মা লক্ষ্মী এতে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন কারন ওই একই|মনে করা হয়, শ্রীলক্ষ্মীর পূজনে তুলসী ব্যবহার করলে দেবী অসন্তুষ্ট হন| কথিত আছে, তুলসির সঙ্গে শালগ্রাম শিলার বিবাহ হয়। শালগ্রাম গ্রাম শিলা নারায়ণের প্রতিভূ। যেহেতু শ্রীলক্ষ্মীও বিষ্ণুপত্নী তাই দুজনের সম্পর্ক মধুর নয় তাই এই পুজোয় তুলসির ব্যবহার চলে না।পুজোর পর মন্দির বা ঠাকুর ঘরের দক্ষিণমুখে প্রসাদ অর্পণ করার কথা বলে থাকেন অনেকে। এর শাস্ত্রীয় ব্যাখ্যা না থাকলেও বাস্তু শাস্ত্র মতে শুভ| লক্ষ্মীপুজোর প্রসাদে না বলতে নেই। অল্প হলেও মুখে তুলতে হয়।এতে দেবী প্রসন্ন হন|ঢাক ঢোল এবং কাঁসর ঘণ্টা লক্ষ্মীপুজোয় বাজানো যাবে না। অত্যধিক শব্দ পছন্দ করেন না শ্রীলক্ষ্মী। সব পুজোতেই বাদ্যি বাজানো হয়। কিন্তু মা লক্ষ্মীর পুজোয় কাঁসর ঘণ্টা বাজালে দেবীর অসন্তুষ্ট হন বলে মনে করা হয়।এবিষয়ে একটি পৌরাণিক ব্যাখ্যা আছে|পুরাণ মতে, ঘণ্টাকর্ণ নামে এক দেবতা পূজনীয় লক্ষ্মী দেবীকে দেখে অশালীন আচরণ করেছিলেন। যে দেবীকে গোটা দেবলোক পুজো করেন, সেই দেবীকেই কিনা অপমান করেন ঘণ্টাকর্ণ। এই ঘটনায় দেবী লক্ষ্মী ঘণ্টাকর্ণের উপর বেজায় ক্রুদ্ধ হন।বলা হয় সেই থেকেই অন্যান্য সমস্ত পুজোতে ঘণ্টা বাজালেও, লক্ষ্মী পুজোতে ঘণ্টা বাজানো নিষিদ্ধ। সেই থেকেই মা লক্ষ্মীর পুজোয় কোন ব্যক্তি ঘন্টা বাজালে, তাঁর উপর বেজায় ক্ষিপ্ত হন পদ্মাসনা দেবী লক্ষ্মী|আবার কিছু উপচার আছে যেগুলি ঠিক ভাবে পালন করলে দেবী আশীর্বাদ করেন লক্ষী পুজোর দিন স্নান করে শুদ্ধ হয়ে লক্ষ্মী গায়ত্রী মন্ত্র ১০৮ বার জপ করলে মা লক্ষ্মী অত্যন্ত সন্তুষ্ট হন। এই মন্ত্র জপ করার সময় পদ্মবীজের মালা ব্যবহার করলে ভাল হয়।দক্ষিণাবর্ত শঙ্খকে বলা হয় মা লক্ষ্মীর শঙ্খ। লাল, সাদা বা হলুদ রংয়ের একটি পরিষ্কার কাপড়, একটি রুপোর পাত্র অথবা মাটির পাত্রের উপর রাখতে হয় এই শঙ্খ। এই শঙ্খের মধ্য দিয়েই বাড়িতে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ প্রবাহিত হয়।বলা হয়, সমস্ত দেবতা বাস করেন তুলসী গাছে। আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী, দেবী তুলসী হলেন মা লক্ষ্মীরই এক রূপ। তাই বাড়িতে তুলসী গাছ থাকলে এবং সেখানে প্রতিদিন প্রদীপ জ্বাললে তুষ্ট হন মা লক্ষ্মী।পুজোর দিন লক্ষ্মী দ্বাদশ স্তোত্র ১২ বার উচ্চারণ করলে ঋণমুক্তি ঘটে অথবা লক্ষীর পাঁচালি অবশ্যই পরুন|আপনাদের সবাইকে আমার তরফ থেকে লক্ষীপুজোর আগাম শুভেচ্ছা|আগামীকাল আপনাদের জন্য দেবী লক্ষী সংক্রান্ত পৌরাণিক কিছু ঘটনা ও তার ব্যাখ্যা নিয়ে ফিরে আসবো| ভালো থাকুন|পড়তে থাকুন|ধন্যবাদ|