দশ মহাবিদ্যা – মাতঙ্গী

1286

আজ আলোচনা করবো দশমহাবিদ্যার অন্যতম রূপ মাতঙ্গী দেবীকে নিয়ে যা দেবীর কন্যা রূপগুলির একটি|সরস্বতীর তান্ত্রিক রূপ দেবী মাতঙ্গী।তিনি দশমহাবিদ্যার নবম রূপও বটে|পুরান অনুসারে মাতঙ্গ মুনির আশ্রমে দেবতাদের আহ্বানে ইনি মাতঙ্গ মুনির স্ত্রীর শরীর থেকে আবীরভূতা হয়ে অসুর দের বধ বধ করেন ও দেবতাদের রক্ষা করেন|স্বাভাবিক ভাবেই দেবী সরস্বতীর থেকে দেবী মাতঙ্গিনীর রূপ ভিন্ন দেবী মাতঙ্গী শ্যামবর্ণা।দেবী মাতঙ্গীর চার হাত। প্রথম হাতে বীণা, দ্বিতীয় হাতে বরাভয় বা অভয় মুদ্রা, তৃতীয় হাতে নর-করোটি এবং চতুর্থ হাতে খড়গ । দেবীর হাতের নর-করোটির উপর আসীন তার বাহন টিয়াপাখি। যখন দেবী মহাকালীর রুদ্ররূপিণী পাপনাশিনী রূপ এবং দেবী সরস্বতীর অসীম জ্ঞান একইরূপে মিলিত হয়, তখন সৃষ্টি হয় দেবী মাতঙ্গীর।দেবীর ভোগ সব থেকে অদ্ভুত ও রহস্যময়|মনুষ্য-উচ্ছিষ্ট ছাড়া আর কোনওরকম সাজিয়ে-গুছিয়ে দেওয়া ভোগে দেবী মাতঙ্গী তুষ্ট হন না । তা সে মানুষ উচ্ছিষ্ট নিরামিষ ব্যঞ্জন হোক বা মানুষ উচ্ছিষ্ট মাছ মাংস হোক, উচ্ছিষ্ট ভোগের কারণেই দেবী মাতঙ্গীর অপর নাম উচ্ছিষ্টা চণ্ডালিনী|অন্তির্নিহিত তাৎপর্য হলো দেবী মানুষের মধ্যেই বাস করেন মানুষ কে অবহেলা করে তিনি খুশি হন না তাই মানুষের উচ্ছিষ্ট তিনি নির্দ্বিধায় গ্রহন করেন এবং সন্তুষ্ট থাকেন|দেবী মাতঙ্গী রক্তবসনা। রজঃস্বলা নারীর রক্ত বস্ত্র দেবী পরিধান করেন এবং তার মাধ্যমে পরশ্রীকাতরতা এবং কুণ্ঠাবোধের যত গ্লানি এবং অপরাধ বোধ দেবী নিজ অঙ্গে গ্রহণ করে মানুষের আত্মার শুদ্ধিকরণ ঘটান|ভারতবর্ষে দেবী মাতঙ্গীর কিছু বিখ্যাত মন্দির রয়েছে যেমন কর্নাটকের বেলগাওঁ, এছাড়া দেবী মাতঙ্গীর মন্দির রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের মাদানাপাল্লেতে, তামিলনাড়ুর নাঙ্গুরে এবং মধ্যপ্রদেশের ঝাবুয়াতে ।আগামী দিনে ফিরে আসবো আরো অনেক পুরান, জ্যোতিষ ও তন্ত্র সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|