জয় জগন্নাথ – দারু ব্রহ্ম রহস্য
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রহস্যর শেষ নেই। জগন্নাথ মূর্তি বা দারুব্রহ্ম মূর্তি সেই রহস্যর অন্যতম।আজকের এই বিশেষ পর্বে লিখবো
এই দারুব্রহ্ম রহস্য নিয়ে।
দারুব্রহ্ম বলতে সাধারণ কাঠের তৈরী দেব দেবীর মূর্তি বোঝায় তবে এই দারুব্রহ্ম অনেকটাই আলাদা। জগন্নাথ দেবের মূর্তি কাঠ বিশেষ ধরণের নীম কাঠ দিয়ে তৈরী করা হয়।বহু যুগ ধরে এই প্রথা অপরিবর্তিত আছে। প্রথম দারুব্রহ্ম ভেসে আসে সমুদ্রে এবং তাকে মূর্তির রূপ দেন স্বয়ং দেব শিল্পী বিশ্বকর্মা।
বর্তমানে জগন্নাথ দেব ও তার দাদা বলভদ্র এবং বোন সুভদ্রার গায়ের রং অনুযায়ী কাঠ নির্বাচন করা হয়।একাধিক শর্ত এবং বিশেষত্ব থাকতে হয়। প্রথম শর্ত কাঠটি একদম নিখুঁত এবং ত্রুটি মুক্ত হতে হবে। জগন্নাথ দেবের মূর্তি নির্মাণে নিমের যে কাঠটি নির্বাচন করা হয়, সেই নিম গাছটিকে চার শাখা বিশিষ্ট হতে হয়।নিম গাছটির নিচের অংশে গাছের শিকড়ে পিঁপড়ের ঘর কিংবা সাপের গর্ত থাকতে হবে। গাছটিকে শশ্মানে তিন মাথার মোড়ে থাকতে হবে।তা নাহলে তিন দিকে পাহাড় বেষ্টিত জায়গায় বেল গাছের সমন্বয়ে আছে এই ধরণের নিম গাছের কাঠ জগন্নাথ দেবের জন্য নির্বাচন করা যেতে পারে।এই সমগ্র পক্রিয়াটি পুরীর দায়িত্বপ্রাপ্ত দৈতাপতিদের তত্ত্বাবধানে হয়ে থাকে।
একটি তত্ত্ব অনুসারে এই দারু ব্রহ্ম মূর্তিতে বিরাজমান শ্রী কৃষ্ণের অক্ষত এবং অমর হৃদপিন্ড যা ব্রহ্ম পদার্থ এবং সেই থেকেই দারু ব্রহ্ম নামকরণ হয়।নব কোলবরের সময় এই ব্রহ্ম পদার্থ পুরোনো দার ব্রহ্ম থেকে নতুন দারুব্রহ্মতে স্থানান্তরিত করা হয়। এই ব্রহ্ম পদার্থ দেখা বা স্পর্শ করা নিষেধ তাই সেই সময়ে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়।
চন্দন যাত্রার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে গেছে রথ যাত্রার দিন গোনা আর কদিন পরেই স্নান যাত্রা। আজ থেকে সেই উপলক্ষে চলবে জগন্নাথ দেব সংক্রান্ত শাস্ত্রীয় আলোচনা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।