আজ দশ মহাবিদ্যার অন্তিম রূপ দেবী কমলা নিয়ে আলোচনা করবো জানবো তার তার রূপের অন্তরনিহিত তাৎপর্য ও পৌরাণিক ব্যাখ্যা|আগেই বললাম দশমহাবিদ্যার শেষ বা দশম রূপ ঐশ্বর্য লক্ষ্মী কমলা।দেবী কমলার উৎপত্তি হয় সমুদ্র মন্থনের সময়।দেবী কমলা চতুর্ভূজা। দেবীর ডান হাতে পারিজাত পুষ্প, বাম হাতে বরমুদ্রা, সমুদ্রের মধ্যে দেবী প্রস্ফুটিত পদ্মে আসীন। দুই পাশে দুইটি হাতি শুড় দিয়ে কলসে করে জল নিয়ে দেবীকে স্নান করাচ্ছে।দেবী কমলা হচ্ছেন ইচ্ছাপূরণের দেবী। মূলত জাগতিক সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি তিনি তাঁর ভক্তদের দেন।কমলাকে গজলক্ষ্মীও বলা হয়।দেবীর এই রূপটি জাগতিক বন্ধনের রূপ।দেবী কমলা ঐশ্বর্য,সুখ,শান্তি,সৌভাগ্য,সৌন্দর্য,প্রীতি ও করুনা প্রদান করেন। পদ্মের উপর তিনি বিরাজমানা এই পদ্ম উর্বরতা,আধ্যাত্মিকতা ও কর্তৃত্বের প্রতীক। যে হাতি দুটি তাঁকে স্নান করাচ্ছে তা বিশালত্ব ও ঐশ্বর্যের প্রতীক। সাধারনত দেবীর পূজা করা হয় জাগতিক লাভের জন্যে। মা কমলা একাধারে বিশুদ্ধতা,পবিত্রতা, সমৃদ্ধি ও সম্পদ,উর্বরতা ও ফসল, এবং সৌভাগ্যের প্রতীকআবার চন্ডীমঙ্গল গ্রন্থে চণ্ডীর একরূপ কমলে কামিনী।দীর্ঘ সমুদ্র যাত্রায় বনিক ধনপতির ছটি ডিঙা একসময়ে সমুদ্রে ডুবে যায়।তারপর কোনােরকমে একটি ডিঙা আশ্রয় করে ধনপতি কালীদহে পৌঁছেন। সেখানে দেবী চণ্ডী তাকে ‘কমলে-কামিনী’ মূর্তি দেখান। ধনপতি সিংহলে গিয়ে সেখানকার রাজাকে কমলে-কামিনী’র কথা বলেন কিন্তু রাজা তা বিশ্বাস না করে তাকে কারাগারে বন্দি করেন।পরবর্তী ঘটনাবলী হয়তো আপনারা জানেন|পুরান মতে দেবী কমলা মহর্ষি ভৃগুর কন্যা।সাধারনত গৃহস্তর বাড়িতে দশ মহাবিদ্যার এই বিশেষ রুপ সম্পদ,উন্নতি এবং সৌভাগ্য প্রদানের জন্যে পূজিতা হয় বহু কাল থেকে|বৈদিক জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে শুক্রগ্রহের ইষ্টদেবী কমলা বা কমলেকামিনী তিনিই মহাশক্তি, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকর্ত্রী তিনিই। তিনিই বিশ্বের সব সম্পদের অধিষ্ঠাত্রী। তিনি সমৃদ্ধির দেবী।কমলা সাধককে ধন-ধান্যে ভরিয়ে রাখেন। কমলার পুজো সমস্ত ধরনের ভয় থেকে মুক্ত রাখে ।সামনেই দূর্গাপুজো|আগামী পর্ব গুলিতে দেবী দুর্গার রূপ, শাস্ত্র মতে তার পুজো সম্পর্কে নানা জানা অজানা কথা ও পৌরানিক ঘটনা নিয়ে ফিরে আসবো|পড়তে থাকুন|জ্যোতিষ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে যেকোনো সময়ে যোগাযোগ করতে পারেন নির্দ্বিধায়|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ।