তীর্থক্ষেত্রে পন্ডিতজি – কন্যা কুমারী

628

কখনো পেশাগত কারনে কখনো আবার নিছক বেড়ানোর আনন্দ উপভোগ করতে ঘুরে বেড়িয়েছি দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে|শুধু তীর্থ যাত্রা নয়, বৈচিত্র পূর্ণ আমাদের দেশের মানুষ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি সবই আমায় মুগ্ধ করেছে বার বার|নানা রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে|সেই সব উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেবো এক এক করে|আজ শুরু করবো দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ দিয়ে, শুরুতেই কন্যাকুমারী প্রথমেই বলি কন্যাকুমারী থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত অনবদ্য।এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আধ্যাত্মিকতার অদ্ভুত বৈচিত্র লক্ষ করা যায়|সমুদ্রের তীরে দেবী কুমারী আম্মান মন্দির। আজও পার্বতী এখানে কুমারীরূপে শিবের প্রতীক্ষারত। কাছেই লঞ্চঘাট। বিবেকানন্দ রক মেমোরিয়ালে যাওয়ার জন্য লঞ্চ ছাড়ছে। সাগরের মাঝে পাথুরে টিলার ওপর অজন্তা ও ইলোরার গুহামন্দিরের আদলে তৈরি রক টেম্পলটি।ভৌগোলিক ভাবে ভারতবর্ষের ম্যাপের একেবারে শেষবিন্দুতে তিনসাগরের মিলনক্ষেত্রে স্বামী বিবেকানন্দের স্মৃতিমাখা শহর কন্যাকুমারী ভারতের একেবারে দক্ষিণে পুণ্যতীর্থ কন্যাকুমারী এর অবস্থান। আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর আর ভারত মহাসাগরের ত্রিবেণী সঙ্গম হয়েছে এখানে।চারপাশে সমুদ্র আর উত্তাল জল রাশি আপনাকে নিয়ে যাবে এক অপার্থিব কল্পনার স্বর্গ রাজ্যে|বিবেকানন্দর সাথে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এই স্থানের|বিদেশ পাড়ি দেয়ার আগে এই স্থানে ধ্যান মগ্ন হয়েছিলেন স্বামীজী|আজও এখানে ব্রোঞ্জের অবয়বে দাঁড়িয়ে স্বামী বিবেকানন্দ।অন্যদিকে আরও এক বিশাল পাথরখণ্ডের ওপর ১৩৩ ফুটের মূর্তি তামিল কবি তিরুভাল্লুভারের। কুমারী মন্দিরের কাছে গান্ধী মেমোরিয়ালও একটি দর্শনীয় স্থান। গান্ধীজির চিতাভস্ম এখানে রাখা হয়েছিল।তিনটি কারণে কন্যাকুমারী বিশেষ এবং ব্যাতিক্রম প্রথম এটি ভারতের শেষ বিন্দু বা মূল ভূখণ্ডের শেষ প্রান্ত। দ্বিতীয় এখানে বঙ্গোপসাগর, আরব সাগর আর ভারত মহাসাগরের মহামিলনে নীল জলরাশির এক রুদ্ধশ্বাস রোমাঞ্চ থাকে সব সময়। তৃতীয় এখানে আছে ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম চিন্তাবিদ এবং গুরু স্বামী বিবেকানন্দের নামাঙ্কিত ‘বিবেকানন্দ রক’। ভারতের বৈচিত্র ও বিশালত্ত্ব অনুভব করতে হলে আসতেই হবে এখানে|আবার পরের পর্বে দক্ষিণ ভারতের অন্য কোনো তীর্থ ক্ষেত্র নিয়ে ফিরে আসবো|ভাগ করে নেবো আমার অভিজ্ঞতা|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|