মৌনী অমাবস্যার ব্যস্ততা বা রটন্তী কালীপুজোর যাবতীয় কাজ শেষ আপাতত তবে বাংলার কালী মন্দির ও সেই সংক্রান্ত রহস্যর কোনো শেষ নেই তাই নিয়মিত টিভির অনুষ্ঠান ও জ্যোতিষ চর্চার পাশাপাশি আজ লিখবো আরেকটি রহস্যময় কালীমন্দিরের কথা|আজকের পর্বে শান্তিপুরের পক্কানেশ্বরী কালী মন্দির|
শান্তিপুরের এই ঐতিহ্যশালী জজ-পন্ডিত বাড়ীতে আনুমানিক ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দে আদি পুরুষ স্বর্গীয় শ্রী পিতাম্বর চট্টোপাধ্যায় মহাশয় পক্কানেশ্বরী দেবীর এই পূজার শুরু করেন|দেবী কালীকেই এখানে পক্কানেশ্বরী নামে ডাকা হয়, কেনো এই নাম সেই প্রসঙ্গে পরে আসছি|
কথিত আছে দেবী এখানে অতি সাধারণ বেশে বিরাজিতা, তিনি ধন দৌলত, জাঁকজমক বা রাজকীয় সাজ চান না, তিনি এই অতি সাধারণ রূপেই থাকতে চান এমন কি অসাধারণ রূপে তাকে গড়ে তোলার চেষ্টা হতেই তিনি হয়ে উঠেছেন ভয়ঙ্করী|আর এখানেই এই মন্দিরের রহস্য|
এখানে দেবীর আসন মাটি দিয়ে তৈরি ও অতি প্রাচীন ওই আসন এবং বেদি মার্বেল পাথর দিয়ে সাজাতে গিয়েই মারাত্মক ভৌতিক ঘটনার সাক্ষী হন পরিবারের মানুষ। মৃত্যু হয় পরিবারের সদস্যরেও। সেই থেকেই মাটির আসনেই পূজিতা হন জজ পণ্ডিত বাড়ির কালী পুজো|
শোনা যায়, একবার মায়ের এই পঞ্চমুন্ডীর আসন বাঁধাই করে নির্ম্মাণ করার কাজে বাড়ীর এক পূর্ব্বপুরুষ উৎসাহী হয়েছিলেন। তাঁর আদেশানুসারে শ্রমিকরা কাজও শুরু করেছিল। কিন্তু এরপর থেকেই বিভিন্ন ভৌতিক কান্ড কারখানায় ভীত হয়ে শ্রমিকরা পালায়। নানা রকম ভৌতিক অভিজ্ঞতা হয়েছিল পরিবারের সদ্যদেরও। কিন্তু এতেও না দমে ওই সদস্য নিজেই কোদাল দিয়ে ওই বেদী বাঁধাই করতে যান। বেদীত একটি কোপ পড়া মাত্র তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানেই মারা যান, আর কখনো কেউ এই দুঃসাহস দেখান নি, দেবীর ইচ্ছে মেনে নিয়ে সেই থেকে বেদীর চারপাশ বাঁধানো হলেও প্রধান বেদীটি আজও গোবর এবং মাটি দ্বারা নির্ম্মাণ করা হয় প্রতি বৎসর।
দেবী পক্কানেশ্বরী কে নিয়ে ভয় ও ভক্তি দুই ই আছে তার ভক্ত দের মধ্যে, আর দেবীর প্রতি শ্রদ্ধা ও আস্থা অগাধ|এক কালে ১৮ টি মোষ এবং ১০৮ টি পাঁঠা বলি হতো পুজোয় তবে কেবলমাত্র পাঁঠাবলির রীতি প্রচলিত আছে, দেবীর পুজোয় থাকে ২০ থেকে ২২ প্রকার নানাবিধ রকমারি পদ সহকারে নৈবেদ্য আর থাকে দেবীর অতি প্ৰিয় গজা ও পক্কান্ন এবং এই পক্কান্ন থেকেই দেবীর নাম পক্কানেশ্বরী|
আবার ফিরবো পরের পর্বে অন্য কোনো মন্দিরের রহস্য নিয়ে|পড়তে থাকুন, সঙ্গে থাকুন আর জ্যোতিষ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমার কাছে আসতে হলে বা অনলাইনে সমস্যার সমাধান চাইলে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|