বীরভদ্র মন্দির

770

প্রায় স্বাভাবিক জীবনের ছন্দ আবার ফিরে এসেছে বললেই চলে তবে আপাতত আমাদের অবশ্যই কিছু স্বাস্থ সংক্রান্ত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে, সে সব মেনেই নিয়মিত চেম্বারে বসছি, আর অনলাইন ভাগ্য বিচারে আগের থেকে একটু বেশি সময় দিচ্ছি|আগামী অমাবস্যায় আমার গৃহ মন্দিরে বিশেষ পূজা ও হোম যজ্ঞর মাধ্যমে গ্রহদোষ খণ্ডন ও হবে, তবে সবই ওই নিয়ম মেনে|আর এসবের মাঝে আজ মন্দির রহস্যর একটি নতুন পর্ব নিয়ে আমি আপনাদের সামনে|আজকের পর্বে বীরভদ্র মন্দির|

দক্ষিণ ভারতের এই মন্দির নিয়ে রয়েছে যেমন কিছু রহস্য তেমনই এক পৌরাণিক ঘটনার ও উল্লেখ পাওয়াযায়|রামায়ন অনুসারে রাবণের সীতাহরণের সময় বাঁধা দিতে গিয়ে প্রাণ যায় জটায়ুর|আকাশপথে সেই লড়াইয়ে রাবণের তলোয়ারের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে সে এসে পড়েছিল ভূপষ্ঠের এক মন্দিরে|সেই মন্দির হলো এই বীরভদ্র মন্দির|

এই মন্দিরের আরেকটি নাম লেপাক্ষী মন্দির কারন মৃত্যুর আগে রামচন্দ্রের সঙ্গে যখন জটায়ুর দেখা হয়, তখন রাম তাকে বলেছিলেন ‘লে পক্ষী’। যার অর্থ পাখি, উঠে দাঁড়াও। সেই থেকেই অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরের এই মন্দিরের নাম হয় লেপাক্ষী মন্দির|

রামায়ণে বর্ণিত এই লেপাক্ষী মন্দির তৈরি হয় ১৫৩৮ সালে। বিজয়নগর রাজের পারিষদ দুই ভাই বীরান্না ও বীরুপান্না মন্দিরটি তৈরি করেন। তখন এর নাম রাখা হয়েছিল বীরভদ্র মন্দির।আবার পুরাণ মতে, এই মন্দির তৈরি অগস্ত্য মুনির হাতে।

বিখ্যাত এই মন্দিরটিতে রয়েছে গণেশ, বীরভদ্র, শিব, ভদ্রকালী, বিষ্ণু ও লক্ষ্মীর মূর্তি ও একটি বিশালআকার নন্দী মূর্তি|এই মূর্তিটি ২৭ ফিট দীর্ঘ ও ১৫ ফিট উঁচু। বিশালাকার এই মূর্তি ভারতের সবচেয়ে বড় নন্দী মূর্তির তকমা পেয়েছে।

এই মন্দির বিজয়নগর শৈলীর জাঁকজমকপূর্ণ স্থাপত্যের একটি নিখুঁত উদাহরণ , যাতে আছে ৭০ টি ঝোলানো স্তম্ভ|আর স্তম্ভই হলো এই মন্দিরের সব থেকে বড়ো রহস্য|ষোড়শ শতাব্দীর এই মন্দিরে প্রায় ৭০টি পাথরের থাম রয়েছে। তবে, তাজ্জব করা বিষয়, একটি থামও মাটির|উপরে দাঁড়িয়ে নেই থাম বা স্তম্ভ গুলি রয়েছে ঝুলন্ত অবস্থায়|

আজ পর্যন্ত কোনও স্থপতি বা ইঞ্জিনিয়ারের মাথায় আসেনি, কীভাবে কোনও কিছুর উপর ভর না দিয়ে শতাব্দীর পর শতাব্দী দাঁড়িয়ে রয়েছে থামগুলি|সত্যি অবাক করা রহস্য|

এই রহস্য নিয়ে অনেক জনশ্রুতি প্রচলিত রয়েছে| শোনো যায় করেন যে একবার একজন ব্রিটিশ স্থপতি এই পিলারের কোন অংশ ভাঙ্গার চেষ্টা করে এর অলৌকিকতা বোঝার জন্য , কিন্তু তিনি সফল হননি |

আজ এখানেই থামছি আবার লিখবো একটি নতুন পর্ব, নতুন কোনো মন্দির রহস্য নিয়ে|পড়তে থাকুন আর যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত প্রশ্ন বা সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করুন উল্লেখিত নাম্বারে|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|