কালী তীর্থ – রঙ্কিনী দেবীর মন্দির
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
জামশেদপুরের কাছে এক পাহাড়ি উপত্যকায় রয়েছে রঙ্কিনী দেবীর মন্দির।এই মন্দিরকে ঘিরে থাকা কিছু অলৌকিক ঘটনা বা জনশ্রুতি নিয়ে আজকের পর্ব।
জনশ্রুতি অনুসারে মাতা রঙ্কিণী এই অঞ্চলের বনে জঙ্গলে বাস করতেন এবং তিনি এই দুর্গম অরণ্যের রক্ষাকতৃ ছিলেন।স্থানীয় আদিবাসীরা তাকে খুব মান্য করতো। তবে তার মন্দির ও মূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয় অনেক পরে। শোনা যায় একবার এক স্থানীয় আদিবাসির মেয়ে সন্ধ্যার পর জঙ্গলে পথ হারায় এবং এক অপদেবতার খপ্পরে পরে। দেবী রঙ্কিনি তখন আবির্ভূত হন এবং মেয়েটিকে রক্ষা করেন।
তারপর জঙ্গলে অদৃশ্য হয়ে যান।সেই রাতেই ঐ মেয়েটির বাবাকে দেবী রঙ্কিণী স্বপ্নাদেশ দিয়ে দেবীর একটি মন্দির তৈরি করতে বলেন।
ঠিক কোন সময়ে মূল মন্দিরটি তৈরি হয়েছে তা জানা যায়না । তবে মন্দিরের বর্তমান যে রূপ আমরা দেখতে পাই, তা তৈরি হয়েছে দেশ স্বাধীন হওয়ার কয়েক বছর পর । অনেকের কাছে মা রঙ্কিনী দেবী কালীর একটি রূপ আবার পূর্ব ভারতের বিভিন্ন উপজাতির কাছে তিনি তাদের আঞ্চলিক বা লৌকিক দেবী।
আবার একটি প্রাচীন কিংবদন্তি অনুসারে বহুকাল আগে স্থানীয় এক ব্যক্তি একটি আদিবাসী মেয়েকে দেবীর রূপ ধারণ করে জঙ্গলে একটি রাক্ষসকে হত্যা করতে দেখতে পান। আদিবাসী লোকটি মেয়েটিকে অনুসরণ করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু মেয়েটি জঙ্গলে অদৃশ্য হয়ে যায়। রাতে দেবী সেই ব্যাক্তির স্বপ্নে আবির্ভূত হন তিনি তাকে তার একটি মন্দির নির্মাণের পরামর্শ দেন।স্থানীয় ভূমিজ নামের উপজাতিদের মধ্যে বিশ্বাস ছিল যে দেবী নিজেই সেই রাক্ষসকে হত্যা করেছেন তাদের রক্ষা করতে এবং দেবী এখানে তাদের রক্ষাকত্রী রূপে বিরাজ করতে চেয়ে মন্দির নির্মাণের পরামর্শ দিয়ে ছিলেন।
শোনা যায় এই মন্দির থেকে কেউ আজ অবধি খালি হাতে ফেরেনি। মা রঙ্কিনী সকলের মনস্কামনা পূর্ণ করেছেন। পাহাড়ি দুর্গম রাস্তা দিয়ে পৌছাতে হয় দেবীর মন্দিরে।মন্দিরের গর্ভগৃহে কোনো মূর্তি নেই। একটি পাথরকে দেবীরূপে পূজা করা হয়।মূল মন্দিরের দুই পাশে রয়েছে আরও দুটো মন্দির। ডানপাশে রয়েছে শিবমন্দির এবং বামপাশের মন্দিরে রয়েছে গণেশের মূর্তি।
ফিরে আসবো আরো এমন সব অজানা
এবং রহস্যময় কালী মন্দিরের ইতিহাস সংক্রান্ত আলোচনা নিয়ে।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।