নেতাজী জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ পর্ব : নেতাজীর কালী পুজো

73

নেতাজী জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে বিশেষ পর্ব

 

নেতাজীর কালী পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

আজ নেতাজীর জন্মদিন সাধারণ আজকের দিনে নেতাজীর দেশ প্রেম এবং স্বাধীনতা সংগ্ৰামের ইতিহাসে তার অবদান সম্পর্কে আলোচনা হয়। আজ তার জন্মদিনে তার চরিত্রের একটি বিশেষ দিক নিয়ে আলোচনা করবো।শৈশব থেকেই নেতাজীর মধ্যে আধ্যাত্মিক চেতনার বিকাশ ঘটে ছিলো। বাড়িতে দূর্গা পুজো এবং কালী পুজোয় অংশ নেয়ার পাশাপাশি একাধিক বারোয়ারি কালী পুজোয় তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন তার মধ্যে দুটি কালী পুজো সম্পর্কে আজকের পর্বে লিখবো।

 

নিউ দিল্লি কালীবাড়ি বা মন্দির মার্গের কালীবাড়ি দিল্লীর অতি পরিচিত কালী পুজো । রাজধানী দিল্লির সবচেয়ে পুরনো এই কালীপুজো প্রায় ১০০ বছরের দোরগোড়ায়। কর্মসূত্রে কলকাতা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে দেশের নতুন রাজধানী দিল্লিতে এসে বসবাস শুরু করেছিলেন তৎকালীন বাঙালিবাবুরা।তারাই এই কালী পুজো শুরু করেন ১৯৩০ সালে সেই প্রবাসী বাঙালিদের হাত ধরেই প্রথম পুজো হয়।এই পুজো কমিটির প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। ১৯৩৫ সালে নেতাজির হাত ধরে স্থাপিত হয় পুজো কমিটি।

দিল্লীতে থাকলে তিনি স্বতস্ফূর্ত ভাবে কালী পুজোয় অংশ নিতেন।আজও এই কালী পুজো নেতাজীর কালী পুজো নামে প্রসিদ্ধ।

 

শোনা যায়, প্রাক্‌-স্বাধীনতার যুগেও দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের অগ্নিযোদ্ধা বিপ্লবীদের গোপন ঘাঁটি ছিল এই কালীবাড়ির প্রাঙ্গণ। পুজো কমিটির প্রথম প্রেসিডেন্ট নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু মন্দির প্রাঙ্গণে স্বাধীনতা ডাক দিয়ে দীর্ঘ ভাষণ দিয়ে ছিলেন।

 

বাংলার একটি বারোয়ারি কালী পুজোর সাথেও নেতাজীর নাম জড়িয়ে আছে।নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু একসময়ে ছিলেন পাথুরিয়াঘাটা বড় কালী পুজোর প্রেসিডেন্ট।

 

পাথুরিয়াঘাটা বড় কালী পুজোর সূচনা ১৯২৮ সালে। ১৯৩০ সালে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন নেতাজি। স্বদেশী আন্দোলনের সময় বিখ্যাত লাঠিয়াল অতুল কৃষ্ণ ঘোষ ছিলেন এই পুজোর প্রবর্তক। স্বদেশীদের শক্তি উপাসনার হাত ধরেই এই কালীপুজোর সূচনা হয়েছিল যেখানে বড়ো ভূমিকা নিয়েছিলেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু।

 

এই পুজো নিঃসন্দেহে কলকাতার বৃহত্তম কালী পুজো।প্রতিমার উচ্চতা ৩২ ফুট। মায়ের রুপোর খাঁড়ার দৈর্ঘ্য হল ৬ ফুট। সোনা ও রূপো মিলিয়ে কালী ঠাকুরের গায়ে থাকে ৭৫ কেজির অলঙ্কার। পুজোর পরের দিন অন্নকূট উৎসবে প্রায়

দেড় হাজার দরিদ্র নারায়ণের সেবার চল রয়েছে এখানে।

 

আজকের পর্ব দেশনায়ক সুভাষ চন্দ্র বসুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা এবং প্রণাম জানিয়ে শেষ করছি। ফিরে আসবো কালীতীর্থ নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।