ভক্তের ভগবান – কৃষ্ণ ভক্ত গোপাল ভট্ট গোস্বামী
পন্ডিতজি ভ্রূগুশ্রী জাতক
শ্রী গোপাল ভট্ট ছিলেন শ্রী চৈতণ্যদেবের প্রিয় শিষ্যদের অন্যতম। তিনি কৃষ্ণের রাধা রমন রূপের পুজো করতেন এবং কৃষ্ণ প্রেমে নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে বিলিয়ে দিয়েছিলেন।আজকের পর্বে এই মহান বৈষ্ণব সাধককে নিয়ে লিখবো।
শ্রী গোপাল ভট্ট গোস্বামীর বয়স তখন মাত্র দশ বছর যখন মহাপ্রভু দক্ষিণ ভারতে তীর্থযাত্রার সময় শ্রী রঙ্গমে তাঁর পারিবারিক বাড়িতে চার মাস অবস্থান করেছিলেন। গোপাল ভট্ট মহাপ্রভুর সেবায় নিজেকে সম্পূর্ণরূপে উৎসর্গ করেছিলেন,
বিদায় নেয়ার সময়ে গোপাল ভাটের বাবা ভেঙ্কট ভট্টকে চৈতন্য মহাপ্রভু বলেছিলেন, “গোপালকে সাধারণ মানুষ হিসাবে নেবেন না। তিনি একজন গোপীর অবতার , রাধা ও কৃষ্ণের ব্যক্তিগত সহযোগী। সময়ের সাথে সাথে, তিনি লক্ষ লক্ষ দুঃখী আত্মাকে সাহায্য করবেন।”
সব শুনে ভেঙ্কট ভট্ট তার পুত্রকে মহাপ্রভুর পদ্মের চরণে নিবেদন করেছিলেন, যিনি তাকে সেই বছরের কার্তিক শুক্লা একাদশীতে দীক্ষা দিয়েছিলেন।
মহাপ্রভু একবার আদেশ দিয়েছিলেন যে আমার পরম প্রিয় গোপাল ভট্টের ভক্তির পথ প্রচার
করা উচিত এবং নেপালের গণ্ডকী নদীতে যাওয়া উচিত, যেখানে তিনি বারোটি শালিগ্রাম শীল পাবেন । এই শীলগুলির মধ্যে আমি সর্বদা দামোদর শালিগ্রাম রূপে বিরাজ করবো।
তিনি যেনো এই শীলগুলিকে কৃষ্ণ রূপে পুজো করেন।
মহাপ্রভু একটি কাঠের আসনও দেন এবং আশীর্বাদ করেন যে গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের পরবর্তী গুরু হিসেবে গোপাল ভট্ট এই আসনে বসবেন বসবেন এবং রাধা ও কৃষ্ণের ভক্তি প্রচার করবেন পরবর্তীতে এই আসন বংশ পরম্পরায় গুরু হওয়ার যোগ্য গোস্বামীদের প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে হস্তান্তর করা হবে। এটা আমার আদেশ।”
পরবর্তীতে গোপাল ভট্ট অলৌকিক ভাবে এই দামোদর শিলা খুঁজে পান এবং স্বপ্নে রাধারমন রুপী কৃষ্ণের দর্শন পান। সেই দামোদর শিলা স্থাপন করে মহাপ্রভুর আদেশ মতো পুজো শুরু করেন এবং সর্বত্র কৃষ্ণ নামের প্রচার শুরু করেন।
গৌড়ীয় বৈষ্ণব সমাজে গোপাল ভট্ট ছিলেন কৃষ্ণ প্রেম এবং ভক্তির মূর্ত প্রতীক অসংখ্য পাপী তাপী নর নারীকে তিনি কৃষ্ণ নামের মাধ্যমে উদ্ধার করেছেন।
ফিরে আসবো অন্য এক ভক্ত এবং এরকমই
এক দিব্য লীলা নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।