ভক্তের ভগবানে – রাজা ভগীরথের কথা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আগামী কালই মকর সংক্রান্তি। অসংখ্য সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষে গঙ্গা স্নান করেন এই তিথিতে। মনে করা হয় এই দিন গঙ্গা স্নানের আলাদা মাহাত্ম আছে। এই গঙ্গা স্নান সম্ভবই হতোনা যদিনা রাজা ভগীরথ তার ভক্তি এবং নিষ্ঠা দিয়ে কঠোর তপস্যা করে স্বর্গের নদী গঙ্গাকে মর্তে নিয়ে আসতেন। আজ এই মহান ভক্তের কথা লিখবো।
রাজা ভগীরথ ছিলেন সূর্য্য বংশীয় রাজা সগরের বংশধর। রাজা হয়ে তিনি জানতে পারলেন তার পূর্বপুরুষরা কপিল মুনির অভিশাপে অভিশপ্ত হয়ে নরকযন্ত্রনা ভোগ করছেন এবং এক মাত্র গঙ্গার মর্তে আগমনই তাদের মুক্তির পথ। তখনই তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন যে যেভাবেই হোক মা গঙ্গা কে মর্তে আনতে হবে।
ব্রম্হা এবং বিষ্ণুর পরামর্শে রাজা ভগীরথ রাজ্য পাট ত্যাগ করে জঙ্গলে গিয়ে গঙ্গার তপস্যা শুরু করেন ভগীরথ। গঙ্গা দেখা দিলে তাঁকে পৃথিবীতে নেমে আসার জন্য তিনি প্রার্থনা করেন।
মা গঙ্গা তাকে দেখা দিলেন এবং তার প্রার্থনা শুনে বললেন যে তিনি পৃথিবীতে নেমে আসতে পারেন। কিন্তু তাঁর প্রচণ্ড স্রোতে পৃথিবী বন্যায় ভেসে যাবে।
এই তেজ এবং গতি একমাত্র দেবাদিদেব মহাদেবই ধারণ করতে পারেন।
তখন ভগীরথ মহাদেবের কাছে গিয়ে তাঁর সাহায্য প্রার্থনা করেন। পুরো বিষয়টা জেনে মহাদেব জানান যে তিনি গঙ্গাকে নিজের জটায় আবদ্ধ করে ফেলবেন। তারপর সেখান থেকে ধীর স্রোতে গঙ্গার একটি শাখা পৃথিবীতে পাঠাবেন। এর ফলে পৃথিবী ধ্বংস হবেনা উল্টে গঙ্গার পূণ্যস্রোতে পৃথিবী সুজলা সুফলা হয়ে উঠবে।
এই ভাবে এক ভক্তের মনের জোরে এবং নিষ্ঠার কাছে আত্ম সমর্পন করেন দেবী গঙ্গা এবং আজও তিনি মর্তে অবস্থান করে লক্ষ লক্ষ পাপী তাপী মানুষকে উদ্ধার করে চলেছেন।
ফিরে আসবো মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বিশেষ পর্ব নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।