স্বামীজীর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ পর্ব স্বামী বিবেকানন্দর অলৌকিক ক্ষমতা

32

স্বামীজীর জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ পর্ব

স্বামী বিবেকানন্দর অলৌকিক ক্ষমতা

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ তার প্রিয় শিষ্য নরেনকে নিজের সর্বস্ব দিয়ে নিঃস্ব হয়ে ছিলেন এবং স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে উঠেছিলেন সর্বজ্ঞানী এবং অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী আজ জন্মদিনে
তার জীবনের কিছু অদ্ভুত ও অলৌকিক ঘটনার মাধ্যমে তাকে স্মরণ করবো।

এক দিনে কী ভাবে গোটা বই পড়া এবং মনে রাখা সম্ভব সম্ভব তা জানা সত্যি কঠিন কাজ, অলৌকিক শক্তি ছাড়া বোধ হয় সম্ভব নয়, আর এই অলৌকিক ক্ষমতা ছিলো বিবেকানন্দর
মেরঠে থাকাকালীন স্বামীজি লাইব্রেরি থেকে বই আনাতেন। স্বামী অভেদানন্দ বইগুলি নিয়ে আসতেন। আবার পরের দিনই বইগুলি পড়ে তা ফেরত দিয়ে দিতেন স্বামীজি। এক দিন লাইব্রেরিয়ানের মনে সন্দেহ হয়। একদিন স্বামীজি লাইব্রেরিতে আসতেই, সেই বই থেকে জিজ্ঞাসা করলেন। স্বামীজি শুধু উত্তর দিলেন না, কোন পাতায় কী লেখা রয়েছে প্রায় সবই বলে দিলেন। যা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলেন ওই লাইব্রেরিয়ান।
এমনই ছিলো স্বামীজীর অদ্ভুত স্মৃতি শক্তি

স্বামীজীর মধ্যে এক ধরণের প্রশান্তি ছিলো যারা তার সংস্পর্শে আসতেন তারা এক আধ্যাত্মিক শান্তি অনুভব করতেন। একবার গুরুভাইদের সাথে হিমালয় ভ্রমণ কালে এক গৃহস্ত ভক্তের বাড়িতে তারা আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। গৃহস্তের এক শিশুকে কাঁদতে দেখে স্বামীজি সারারাত তাকে কোলে নিয়ে জপ করে কাটিয়েছিলেন আশ্চর্য বিষয় সারা রাত শিশুটি আর কাঁদেনি।

একবার মঠের বারান্দায় সারা রাত স্বমীজীকে পায়চারি করতে দেখে তার এক গুরুভাই তাকে জিগেস করলেন কি হয়েছে। স্বামীজী বললেন কথাও বহু মানুষ বিপদে পড়েছে। কষ্ট পাচ্ছে।
পরদিন জানা যায় ভারত থেকে বহু দুরে সমুদ্রে একটি জাহাজ দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই রাতে এবং
বহু মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ফরাসী গায়িকা মাদাম এমা কাল্ভের সাথে শিকাগোয় ১৮৯৪ খ্রিঃ সাক্ষাৎ হয় স্বামী বিবেকানন্দর, মাদাম কাল্ভে তখন জীবনের প্রতি সম্পুর্ন বীতশ্রদ্ধ এবং আত্মহত্যা প্রবণ হয়ে পড়েছিলেন সেটাও স্বাভাবিক কারন তিনি তখন মেজাজী, একগুঁয়ে এবং পুরোমাত্রায় ভোগী মহিলা এবং স্বাভাবিক কারণেই তাঁর জীবনে শান্তি ছিল না, ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার অন্তরে|তাকে দেখেই স্বামীজী বলে উঠলেন,বাছা, কী ঝোড়ো হাওয়াই না তুমি নিয়ে এলে। শান্ত হও।’ তারপর অতি শান্তস্বরে মাদামের জীবনের একান্ত ব্যক্তিগত ঘটনা বলতে লাগলেন|যেন এক অলৌকিক ব্যাপার। ‘আপনি এত সব জানলেন কি করে?এই প্রশ্নের উত্তরে স্বামীজী বললেন,আমি খোলা বইয়ের মতন তোমার ভেতরটা পড়তে পারি।শুধু তাই নয় স্বামীজীর কথায় তার অন্তরের সব ঝড় থেমে গেলো শান্ত হলেন তিনি,স্বামীজীর শিষ্য হয়ে সব ছেড়ে আধ্যাত্মিক পথ আপন করে নিলেন|

জন্মদিনে শ্রদ্ধা এবং প্রনাম জানাই এই মহান সন্ন্যাসীকে|ফিরে আসবো ধারাবাহিক আধ্যাত্মিক আলোচনা নিয়ে আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।