মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বিশেষ পর্ব : মহা কুম্ভর আধ্যাত্মিক তাৎপর্

21

মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে বিশেষ পর্ব

মহা কুম্ভর আধ্যাত্মিক তাৎপর্

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

পবিত্র মকর সংক্রান্তি উপলক্ষে আজ থেকে শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে গঙ্গা, যমুনা ও পৌরাণিক সরস্বতীর সঙ্গমে অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলা বিশ্বের সর্ব বৃহৎ ধর্মীয় মিলন উৎসব।মকর সংক্রান্তর এই পুন্য তিথিতে আজ কুম্ভ মেলার আধ্যাত্মিক এবং ধর্মীয় তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করবো।

প্রতি ৪ বছরে হয় কুম্ভ, ৬ বছরে হয় অর্ধকুম্ভ ও ১২ বছরে হয় পূর্ণ কুম্ভ। আর ১৪৪ বছর পর আসে মহাকুম্ভ।এবারের মহাকুম্ভকে বিশেষ বিবেচনা করা হচ্ছে কারণ ১৪৪ বছর পরে একটি বিরল গ্রহগত সংযোগ এই বছর সৃষ্টি হতে চলেছে।পৌরাণিক কালে সমুদ্র মন্থনের সময়ে যে রূপ গ্রহের অবস্থান ছিলো এবছর সেই রকম গ্রহের অবস্থান থাকবে।

পুরান অনুসারে একবার ঋষি দূর্বাসার অভিশাপে ইন্দ্র ও অন্যান্য দেবতারা তাদের ক্ষমতা হারান এবং স্বর্গ হয়ে যায় শ্রী হীন । সুযোগ বুঝে অসুররা দেবতাদের আক্রমণ করে এবং এই যুদ্ধে দেবতারা পরাজিত হন। তখন সমস্ত দেবতা একত্রে ভগবান বিষ্ণুর কাছে সাহায্যের জন্য গেলেন এবং ভগবান বিষ্ণু অসুরদের সঙ্গে তাদের সমুদ্র মন্থন করে সেখান থেকে অমৃত আহরণের পরামর্শ দেন।

দেবতা এবং অসুররা সমুদ্র মন্থন করলে অমৃতের পাত্র বের হলে অসুররা তা অধিকার করে নিতে চাইলেন। অসুরদের হাতে অমৃত অমৃত গেলে তারা অমর এবং অজেয় হয়ে যাবে। সৃষ্টি ধ্বংস হতে পারে তাই ভগবান ইন্দ্রের পুত্র জয়ন্ত তা নিয়ে আকাশে উড়ে যান । অসুররাও অমৃত পাত্র নিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এরপর অমৃত কলসের জন্য বারো দিন ধরে দেবতা ও অসুরদের মধ্যে যুদ্ধ হয়। সেই সময়ে অমৃত কলশের কিছু ফোঁটা প্রয়াগরাজ এবং পার্শবর্তী কিছু অঞ্চলে পড়েছিল তাই এই পবিত্র স্থানে মহাকুম্ভ মেলার আয়োজন করা হয়।

মহাকুম্ভে স্নানের কিছু শাস্ত্রীয় রীতি নীতি আছে প্রথমে শাহী স্নানে অংশ নেন ন নাগা সাধুরা। নাগা সাধুদের স্নানের প্রথা বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে।তারপর স্নান করেন অন্যান্য সাধু সন্ন্যাসীরা এবং গৃহস্তরা।সাধারণত স্নান করার সময়, ৫ টি ডুব দিন, তবেই স্নান সম্পূর্ণরূপে বিবেচিত হবে। স্নানের পর সূর্য্য প্রণাম করে বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়। স্নান শেষে দান
ধ্যান করতে হয় এবং বজরংবলী এবং বাসুকি কে প্রণাম করতে হয়।

এই বিশেষ তিথিতে মহাকুম্ভে স্নান করলে সর্ব প্রকার কষ্ট দূর হয় এবং পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং জীবাত্মা মোক্ষ লাভ করতে সক্ষম হয়।

সবাইকে জানাই মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা এবং
অভিনন্দন। ধারাবাহিক আধ্যাত্মিক আলোচনা নিয়ে ফিরে আসবো আগামী পর্বে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।