- ভক্তের ভগবান – শ্রী কৃষ্ণ এবং দ্রৌপদী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
শ্রী কৃষ্ণ যুগে যুগে অবতার রূপে পৃথিবীতে এসেছেন এবং নানা রকম লীলা করছেন।
তার সর্বদা ছিলেন তার লীলা সঙ্গিনীরা।
সত্য যুগে যিনি বেদবতী ত্রেতাতে তিনিই সীতা এবং দ্বাপর যুগে তিনিই দ্রৌপদী। তার কৃষ্ণ ভক্তির জন্য তার আরেকনাম কৃষ্ণা।
পাঞ্চালরাজ দ্রুপদের যজ্ঞ বেদী থেকে দ্রৌপদীর আবির্ভাব হয়ে ছিলেন এবং তার স্বয়ংবর সভায় পৌঁছে পঞ্চ পান্ডব তাদের বীরত্ব এবং শ্রী কৃষ্ণের আশীর্বাদের জোরে দ্রৌপদীকে জয় করেন।
শ্রী কৃষ্ণ এবং দ্রৌপদীর সম্পর্ককে নানা ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। আসলে পঞ্চপান্ডবের স্ত্রী হয়েও আজীবন তিনি কৃষ্ণ ভক্তে মজে ছিলেন।
যখন রাজ সভায় কৌরব কতৃক দ্রৌপদীর
বস্ত্র হরণ হচ্ছিলো তখন স্বয়ং শ্রী কৃষ্ণ তার সন্মাম রক্ষা করেন। এখানে অনেকই প্রশ্ন করেন কৃষ্ণ যার পাশে আছেন তাকে নিজের সন্মান রক্ষার জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো কেন।
আসলে শ্রী কৃষ্ণ দ্রৌপদীর ভক্তির পরীক্ষা নিয়ে ছিলেন। যতক্ষণ পর্যন্ত দ্রৌপদী নিজের সন্মান রক্ষার ভার নিজের হাতে রেখেছিলেন ততক্ষন পর্যন্ত শ্রী কৃষ্ণ হস্থক্ষেপ করেননি যেই মুহূর্তে দ্রৌপদী সমস্ত ভার কৃষ্ণের হাতে অর্পণ করে নিজেকে তার চরনে সম্পূর্ণ রূপে সমর্পন করলেন তখন শ্রী কৃষ্ণ নিজেই অবতীর্ণ হলেন।
পরবর্তীতে দ্রৌপদীর ইচ্ছেতেই পান্ডবরা কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে অংশ নেন এবং কৌরবদের পরাজিত করেন। সেখানেও নেতৃত্বে স্বয়ং শ্রী কৃষ্ণ।
এই যুদ্ধে শ্রীকৃষ্ণ আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। তাঁর হাত থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ফলে পান্ডব-ঘরণী দ্রৌপদী ক্ষতস্থানটিতে নিজের শাড়ির কিছু অংশ ছিঁড়ে বেঁধে দেন। এর ফলে অভিভূত হয়ে কৃষ্ণ দ্রৌপদীকে নিজের ভগিনীর বলে ঘোষণা করেন এবং কোনও না কোনও দিন এর প্রতিদান দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। দ্রৌপদী কর্তৃক কৃষ্ণের হাতে কাপড় বেঁধে দেওয়ার এই ঘটনাটি থেকেই পবিত্র রাখীবন্ধন উৎসবের প্রচলন ঘটে।
ফিরে আসবো ভক্ত এবং ভগবানের পরবর্তী পর্ব নিয়ে যথা সময়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।