ভক্তের ভগবান – কৃষ্ণভক্ত রাজা জয়মাল
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
ভগবান যেমন করুনা ময় তেমনই অধর্মের বিনাশ করতে বা নিজ ভক্ত কে রক্ষা করতে তিনি রূদ্র মূর্তিও ধারণ করতে পারেন। কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে তিনি যেমন পান্ডবদের কূটনৈতিক জ্ঞান দান করে ছিলেন। তেমনই রাজা জয়মাল কে প্রতিবেশী রাজার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে নিজেই
অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিলেন। আজকের পর্বে আপনাদের সেই ঘটনার কথা জানাবো।
ভক্তমালা গ্রন্থে রাজা জয়মালের কথা সুন্দর ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। রাজা জয়মাল কৃষ্ণকে শ্যামসুন্দর রূপে পুজো করতেন এবং রাজ্য পরিচালনার থেকে কৃষ্ণ প্রেমেই বেশি মজে থাকতেন। তার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তার প্রতিবেশী রাজ্যের রাজা জয়মালের রাজ্য আক্রমণ করে বসেন। যুদ্ধের জন্য জয় মাল প্রস্তুত ছিলেন না। তাই যুদ্ধে তার পরাজয় প্রায় নিশ্চিত
হয়ে পরে। যখন তার সৈন্যরা যুদ্ধ ক্ষেত্র ছেড়ে পলায়ন করছে এবং যেকোনো মুহূর্তে শত্রুরা রাজ্য দখল করবে এমন সময়ে জয়মালের মন্ত্রীরা তাকে আসন্ন বিপদের কথা জানাতে ছুটে আসেন।
জয়মল তার উপাসনায় অবিচল থেকে বলেন
“এই রাজ্য আমার ভগবান কৃষ্ণ আমাকে দিয়েছিলেন, এবং তিনি যদি এটি কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তবে আমি কী করতে পারি? কিন্তু তাঁর আশীর্বাদ আমার সঙ্গে থাকলে কেউ আমার ক্ষতি করতে পারবে না।”
জয়মাল যখন তাঁর পূজা শেষ করে যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছেন, তখন তিনি দেখতে পান তাঁর ঘোড়া হাঁপাচ্ছে এবং ঘামে ভিজে যাচ্ছে। তিনি আরও দেখলেন যে শত্রু বাহিনী সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজাও আত্ম সমর্পন করেছেন।
বন্দী রাজা জানালেন একটি রহস্যময় নীল যোদ্ধা ঘোড়ায় চেপে এসে একা হাতে তার বাহিনীকে ধ্বংস করেছেন এবং জয় মালের রাজ্য
তিনিই রক্ষা করেছেন।
সব শুনে রাজা জয়মাল বুঝতে পারলেন স্বয়ং শ্যাম সুন্দর তার রাজ্য রক্ষার জন্যে যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়েছিলেন।
ভক্ত যখন সম্পূর্ণ রূপে ভগবানের কাছে আত্ম সমর্পন করেন তখন ভগবানে তার ভক্তকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করেন। প্রয়োজন শুধু ভক্তি এবং বিশ্বাস।
ফিরে আসবো ভক্ত এবং ভগবানের পরবর্তী পর্ব নিয়ে। থাকবে এমনই এক অলৌকিক ঘটনা এবং তার ব্যাখ্যা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।