কালী কথা – দুবরাজপুরের শ্মশান কালী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
বীরভূমের মাটি শক্তি স্বাধনার জন্য বরাবরই প্রসিদ্ধ। একাধিক সিদ্ধ পীঠ এবং তারাপীঠের ন্যায় জগৎ বিখ্যাত শক্তি পীঠ যেমন আছে তেমনই আছে তিনশো বছরের প্রাচীন এক শ্মশান কালী মন্দির। আজকের পর্বে এই শ্মশান কালী মন্দির নিয়ে লিখবো।
আনুমানিক সাড়ে তিনশ থেকে চারশ বছরের প্রাচীন বীরভূমের দুবরাজপুরের পাহাড়েশ্বরের শ্মশান কালীর প্রধান বিশেষত্ব হলো এখানে কালী পুজো শুরু করেছিলেন বৈষ্ণবরা এবং বৈষ্ণবরা আজও এই পুজোর দায়িত্ব ভার গ্রহণ করে আসছেন।
দুবরাজপুরের এই শ্মশান কালীর পুজোর দায়িত্বে থাকা বৈষ্ণব পরিবারের পূর্বপুরুষ হারাধন চক্রবর্তী কামাখ্যা থেকে এই শ্মশান কালীকে এনে দুবরাজপুরের শ্মশানের পাশে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
সেই সময় এই জায়গা ছিল সম্পূর্ণ জঙ্গলে ঘেরা এবং শ্মশান। পরবর্তীকালে ধীরে ধীরে জনবসতি বাড়তে থাকায় শ্মশান কিছুটা দূরে সরে গিয়েছে।
সনাতন ধর্মে সাধারণত শাক্ত এবং বৈষ্ণবদের মধ্যে এক ধরণের বিরোধ লক্ষ্য করা যায়। একে অন্যের সমালোচনা এবং মত বিরোধ থাকে কিন্তু এই শ্মশানকালীর পুজোয় শাক্ত এবং বৈষ্ণব ভাবধারা মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে
বহু পূর্বে।
বীরভূমের দুবরাজপুরের এই শ্মশান কালীর প্রতিমা তৈরি থেকে পুজো এবং বিসর্জন সবক্ষেত্রেই রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য। সারা বছর এই শ্মশান কালী বৈষ্ণব পরিবারের হাতে পূজিত হলেও দুর্গাপুজোর পর একাদশীর দিন এলাকার দাস পরিবারের হাত দিয়ে এখানকার প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। বৈষ্ণবদের হাতে এখানকার শ্মশানকালী পূজিত হলেও পুজো হয় তন্ত্র মতে।
কালী পুজো এবং দুর্গাপুজো দুই পালিত হয় বেশ জাঁকজমক পূর্ণ ভাবে। বহু মানুষের সমাগম হয়।
আবার পরবর্তী পর্বে ফিরে আসবো কালী কথার আরেক পর্ব নিয়ে। থাকবে আরেকটি প্রাচীনএবং ঐতিহাসিক কালী পুজোর ইতিহাস।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।