ভক্তের ভগবান – শ্রী কৃষ্ণ এবং বৃন্দাবনের সাধু
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
আজ ভক্ত এবং ভগবানের এই পর্বে আপনাদের ভগবান কৃষ্ণের এক অদ্ভুত লীলার কথা বলবো যা ঘটেছিলো বৃন্দাবনের বৈষ্ণব সাধুর সাথে।
বৃন্দাবনে এক জটাধারী বৈষ্ণব সাধু বাস করতেন একবার তার জটা পথে চলার সময় বৃক্ষের শাখা প্রশাখায় আটকে যায়। অনেক চেষ্টা করেও ঐ জটার প্যাঁচ কিছুতেই খুলতে পারলেন না এবং তখন তিনি আসন করে ওখানেই ধ্যানে বসে পড়লেন যারা সাহায্য করতে এগিয়ে এলো তাদের তিনি বললেন যিনি এই জটার প্যাঁচ লাগালো, তিনি এই জটারসপ্যঁচ খুলতে আসবে এবং যদি না আসে আমি এখানে আসন করে বসে থাকব।তাতে যদি প্রাণ ত্যাগ করতে হয় তো তাই হোক।
তিনদিন এমন করে মহাত্মাজী বসে রইলেন সেই স্থানে |তিন দিন পর এক ঘোর কৃষ্ণ বর্ণের সুন্দর রাখাল ছেলে এল। বালক বড় আদর করে বলল, বাবা তোমার তো জটা প্যাঁচ লেগে গেছে |আমি জটা খুলে দেব| আর যেই সেই বালক জটা খোলার জন্য এগিয়ে এল|সাধক বাঁধা দিয়ে বললেন যে জটা গাছের সাথে জড়াল সে এসে এই প্যাঁচ খুলবে। তা না হলে এখানে বসে গোবিন্দ নাম নিয়ে প্রাণ দিয়ে দেব। রাখাল ছেলে বলল- “আরে মহারাজজী যে এই কাজটা করল তার নাম তো বলুন, ওকে আমি খুঁজে ডেকে নিয়ে আসি।” সাধক বললেন যে সে আপনা আপনি এসে যাবে, ডাকতে হবে না। তুমি যাও|বালক তখন মৃদু হেসে রাখাল বেশ ত্যাগ করে বাঁকেবিহারী রূপে প্রকট হলেন এবং ভক্তর উদ্দেশ্যে বললেন মহাত্মাজী আমিই তো এই জটার প্যাঁচ লাগিয়েছি। আমি নিজেই এখন জটা খুলে দেবো এই বলে কৃষ্ণ স্বয়ং হাত বাড়ালেন মহাত্মাজী বললেন আমি তো নিত্য নিকুঞ্জবিহারীকৃষ্ণের পরম উপাসক|তুমি কি সে?কিন্তু তিনি তো শ্রীরাধারাণীকে বিনা এক মূহুর্ত থাকতে পারে না। কিন্তু তুমি বিহারীজী একা একলা হয়ে দাঁড়িয়ে আছ।না তুমি আমার আরাধ্য কৃষ্ণ হলে একা আসতেনা।
মহাত্মাজী এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে শ্যামের পাশে শ্রীজী রাধারানী বিরাজমান হলেন। শ্রীরাধারানী নিজের প্রিয়তম শ্যামের পাশে এসে মহাত্মাকে সাক্ষাৎ দর্শন দিলেন আর আরাধ্য ভগবানের দর্শন পেয়ে মহাত্মাজী আনন্দে বিভোর হয়ে গেলেন তার চোখ দিয়ে অশ্রুধারা পড়তে লাগল।
তিনি বুঝলেন এই সবই শ্রী কৃষ্ণের লীলা। আজ তার জীবন সার্থক হয়েছে। শ্রী কৃষ্ণ এবং রাধারানী তাকে দর্শন দিয়েছেন।এর পর রাধাকৃষ্ণ
তার জটার প্যঁচ খুলে তাকে মুক্তি দিলেন।
এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় ভগবান
তার ভক্তের সামান্য কষ্টও সহ্য করতে পারেন না এবং মন থেকে ডাকলে তিনি সাক্ষাৎ দর্শন দেন
এবং ভক্তকে উদ্ধার করেন।
ভক্ত এবং ভগবানের এমনই লীলা নিয়ে
আবার ফিরে আসবো আগামী পর্বে।
পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।