জগন্নাথদেব এবং বিমলা দেবী
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
শুধু জগন্নাথ সুভদ্রা বলরাম নন পুরীর মন্দিরে বিরাজ করছেন বিমলা দেবী।পুরীর মন্দিরে বিমলাদেবীর অধিষ্ঠানের কারন এবং
জগন্নাথদেবের সাথে তার সম্পর্ক নিয়ে
আজকের এই পর্ব।
আজও জগন্নাথের ভোগ সবার আগে সমর্পন করা হয় দেবী বিমলাকে । দেবীর পুজো হয় তন্ত্রমতে। মনে করা হয় দেবী বিমলার দর্শন না করা অবধি জগন্নাথ দর্শন সম্পূর্ণ হয় না। শৈব বিশ্বাস অনুযায়ী এই দেবীর ভৈরব জগন্নাথ। এক্ষেত্রে জগন্নাথের প্রকাশ শিবরূপে। আর শ্রীমন্দিরে তাঁরা একত্রে শিব এবং শিবানী রূপে অবস্থান করছেন।
পীঠনির্ণয় তন্ত্রে আছে – “উৎকলে নাভিদেশশ্চ বিরিজাক্ষেত্রমুচ্চতে বিমলা মা মহাদেবী, জগন্নাথস্ত ভৈরব”অর্থাৎ তিনি শ্রীমন্দিরের কত্রী।প্রভু জগন্নাথ তাঁর ভৈরব হিসেবে অবস্থান করেন।আবার তিনিদেবী মহামায়ার অংশ এবং একান্ন টি সতীপীঠের অন্যতমা দেবী বিমলার মন্দির।
পুরান মতে বিষ্ণু দর্শন হেতু মহাদেব একবার বৈকুণ্ঠে হাজির হন। সেই সময় বিষ্ণু আহারে বসেছেন। যা দেখে শিবের ইচ্ছা হয় নারায়ণের প্রসাদ গ্রহন করবেন তাই আহার শেষে নারায়ণের থালায় পড়ে থাকা সামান্য অংশ মুখে দেন তিনি। নারায়ণের ভাবে তিনি এতটাই আবিষ্ট ছিলেন যে সেই প্রসাদের কিছুটা তাঁর মুখে লেগে যায়। কৈলাসে ফিরে নারদকে দেখতে পান মহাদেব। বিষ্ণুভক্ত নারদ মহাদেবের মুখে লেগে থাকা প্রসাদ দেখেই বুঝতে পারেন এই প্রসাদ তাঁর উপাস্যের। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে প্রসাদ নিয়ে মুখে পোড়েন তিনি। দেবী পার্বতীও সেখানে উপস্থিত হন। প্রসাদ পাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন কিন্তু শিব তো অপারগ কারন আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। ক্রোধান্নিতা পার্বতী হাজির হন নারায়ণের কাছে। সব শুনে নারায়ণ তাঁকে বলেন এবার থেকে পুরী ধামে তাঁর শক্তি রূপে অবস্থান করবেন দেবী।এবং নারায়ণের বা জগন্নাথদেবের ভোগ সবার আগে তাঁকে অর্পন করা হবে। যে প্রথা আজও এতটুকু বদল হয়নি। দেবী বিমলাকে অর্পন করার পরই জগন্নাথের প্রসাদ হয়ে ওঠে মহাপ্রসাদ।সেই প্রসাদ পরবর্তীতে বিতরণ করা হয় ভক্তদের মধ্যে।
আবার পুরাণমতে সতীর ডান পায়ের কড়ে
আঙুল পড়েছিল এই খানে তাই এটি সতী পীঠ।
জগন্নাথ দেবের লীলা এতো বিস্তৃত এবং তার মহাত্ম এতো গভীর যে এই প্রসঙ্গে দীর্ঘ দিন আলোচনা করা যায়।ফিরে আসবো আগামী পর্বে প্রভু জগন্নাথ প্রসঙ্গে আলোচনা নিয়ে।
থাকবে আরো অনেক তথ্য।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।