জয় জগন্নাথ – ত্রিমূর্তি রহস্য

19

জয় জগন্নাথ – ত্রিমূর্তি রহস্য

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

আর কদিন পরেই প্রভু জগন্নাথের স্নান যাত্রা।
সেই উপলক্ষে cজগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা কে নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা করছি।আজ এই ত্রিমূর্তি সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করবো।

জগন্নাথ একা নন বলরাম এবং সুভদ্রা তার সাথেই পুরী ধামে বিরাজমান সুভদ্রা আসলে সেই যোগমায়া, যাঁকে তাঁর জন্মের রাতেই বাবা-মায়ের থেকে সরিয়ে এনে তুলে দেওয়া হয়েছিল কংসের হাতে। সদ্যোজাত কৃষ্ণকে রক্ষা করতে এবং অন্যদিকে বলরাম হলেন কৃষ্ণের জ্যেষ্ঠভ্রাতা। তিনি বলদেব, বলভদ্র ও হলায়ুধ নামেও পরিচিত।

আমরা প্রত্যেকে নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছি যে জগন্নাথ সুভদ্রা এবং বলরামের কারও হাত নেই। এমনকি চোখের পাতাও নেই।

হিন্দু ধর্মের অন্যান্য দেবতাদের মূর্তি বা প্রতিমার সঙ্গে জগন্নাথের বিগ্রহের কিছু পার্থক্য রয়েছে। বিগ্রহের আকারও বিচিত্র। চৌকো মাথা, বড় বড় চোখ এবং অসম্পূর্ণ হাত।

প্রভু জগন্নাথের মূর্তিতে চোখের পাতা নেই|এর একটা কারন তিনি জগতের নাথ এবং তিনি সদা জাগ্রত|একটি মুহূর্তের জন্যও তিনি দেখা বন্ধ করেননা|তিনি পরম দয়ালু তাই প্রতি মুহূর্তে তার ভক্তদের উপর তার কৃপা দৃষ্টি নিক্ষেপিত হয়|
মূর্তির হাত অসম্পূর্ণ কারন দেব শিল্পী বিশ্বকর্মার শর্ত অনুযায়ী নিদ্দিষ্ট দিনের পূর্বেই মূর্তি নির্মাণ কক্ষের দ্বার উন্মুক্ত হওয়ায় মূর্তি অসম্পূর্ণ থেকে যায় এবং সেই অর্ধ সম্পূর্ণ মূর্তি রত্ন বেদীতে স্থাপন করা হয়।

‘নব-কলেবর’ নামের রহস্যময় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিয়মিত নিদ্দিষ্ট সময়ের ব্যাবধানে দেবতার পুরোনো মূর্তি সরিয়ে নতুন মূর্তি বসানো হয় আর পুরোনো মূর্তির ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে সঞ্চারিত হবে – এটাই পূজারীদের বিশ্বাস।
এ জগন্নাথ মন্দিরে ‘গর্ভগৃহ’ বা মূল কেন্দ্রস্থলে এই অতি গোপনীয় প্রথার সময়ে পুরোহিতদের চোখ আর হাত বাঁধা থাকে – যাতে পুরোনো মূর্তি থেকে ‘আত্মা’ নতুন মূর্তিতে গিয়ে ঢুকছে – এটা তাঁরাও দেখতে না পান।

জগন্নাথ দেব সংক্রান্ত আরো অনেক রহস্য এবং পৌরাণিক ঘটনা আপনাদের জানাবো ধারাবাহিক ভাবে। ফিরে আসবো আগামী পর্বে।
পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।