বাংলার কালী – কোচবিহারের শ্মশান কালীর পুজো
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
তন্ত্র সাধক কৃষ্ণানন্দ আগমবাগিশ এর হাত ধরে বাঙালির ঘরে ঘরে দক্ষিনা কালীর পুজো
শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত বাংলায় মুলত শ্মশান কালীর পুজো হতো। সেই সময় কালী পুজো করতো ডাকাত এবং তন্ত্র সাধকরা। এমনই এক জাগ্রত শ্মশান কালী মন্দির আছে কোচবিহারে।
কোচবিহার শহরের হাজরাপাড়া এলাকায় পুরাতন শ্মশান কালী মন্দিরটি রয়েছে। একসময় তোর্সা নদীর পাশেই ছিল শ্মশান। সেখানেই প্রতিষ্ঠিত ছিলেন শ্মশান কালী মা।তোর্সা নদীর তীরেই
পুজো হতো কালী মায়ের তারপর ১৯৫৩ সালে বন্যায় নদী ভাঙ্গনে হারিয়ে যায় সেই মায়ের মন্দির। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় মা। তারপরে বহু কষ্টে মায়ের মন্দিরের অবশিষ্টাংশ ধরে রেখে আজও পুজো হয়ে আসছে
স্থানীয়দের মতে এই পুজো পাঁচশো বছরেরও বেশি পুরনো।প্রথম দিকে এই পুজো শুরু করেছিলেন কোচবিহারের মহারাজা গোপাল কৃষ্ণ নারায়ণ। দয়াল চন্দ্র সাধু প্রথম এই পুজো শুরু করেন। এরপর বন্যার সময় মন্দির ভেঙে যায় একটা সময়। কিছুটা অংশ চলে যায় নদীর বিপরীত দিকে টাপুরহাট এলাকায়। সেখানেও শ্মশানকালীর একটি মন্দির করা হয়েছে। কিছুটা অংশ চলে আসে নদীর এই পারে অর্থাৎ শহরের দিকে, যা বর্তমানে পুরাতন শ্মশান কালী মন্দির হিসেবে পরিচিত।
একটা সময় কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড এই মন্দিরের দায়িত্ব নিতে চেয়েছিল। কিন্তু, স্থানীয় বাসিন্দারা আবেগের কারণে মন্দিরের দায়িত্বভার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড-এর হাতে দিতে অস্বীকার করে। বর্তমানে যেখানে পুজো চলছে সেখানে মা কে প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন স্থানীয় এক মাতৃ সাধক তার নাম ছিলো।বুধু মুনি। তার মৃত্যুর পরে তার পুজো পদ্ধতি মতে সেবায়েতরা বংশপরম্পরায় পুজো করে আসছেন।
এখানে লক্ষ্মী পুজোর দিন থেকে দীপাবলি কালী পুজো পর্যন্ত বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়।
এলাকাবাসীর কথায়, ‘জাগ্রত এই দেবী সবসময়ই সাধারণ মানুষের কল্যাণ করে থাকেন।
বাংলার প্রাচিন এবং ঐতিহাসিক কালী মন্দির গুলি নিয়ে এই ধারাবাহিক আলোচনা চলত থাকবে। ফিরে আসবো আগামী পর্বে।
পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।