বাংলার কালী – পুরুলিয়ার  বড়ো কালী পুজো

103

বাংলার কালী – পুরুলিয়ার  বড়ো কালী পুজো

 

পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক

 

 

পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরের বড়ো কালী। শুধু জেলা নয় রাজ্যের অন্যতম বিখ্যাত কালীপুজো।এই পুজো মৌতড়ের পুজো নামেও প্রসিদ্ধ।

আজকের বাংলার কালী পর্বে এই বিখ্যাত

কালী পুজোটি নিয়ে লিখবো।

 

শোনা যায় আজ থেকে আড়াইশো বছর আগে এই গ্রামে কালীপুজোর সূচনা করেন গ্রামে জমিদার বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের আত্মীয় শোভারাম বন্দ্যোপাধ্যায়। আদতে বর্ধমান শহরের বাসিন্দা সাধক প্রকৃতির মানুষ শোভারাম বন্দ্যোপাধ্যায় বিয়ের পর থেকে মৌতোড় গ্রামেই শশুরালয়ে থাকতেন।এই শোভারাম ছিলেন মা কালীর ভক্ত ।

এও শোনা যায় যে তিনি গুপ্ত সাধক ছিলেন।

 

সংসারে তার মন ছিলোনা দিনরাত জঙ্গল, দুর্গম এলাকায় এমনকি শ্মশানঘাটেও ঘুরে বেড়াতেন। হঠাৎ তিনি একদিন মা কালীর মূর্তি প্রতিষ্ঠার স্বপ্নাদেশ পান। তারপরই পাথরের মূর্তি তৈরি করে পঞ্চমুন্ডীর আসন তৈরি করে তিনি পুজো শুরু করেন।

 

সেই পুজোই আজকের বড়ো কালীর পুজোর রূপ নিয়েছে।এরপর যতদিন গিয়েছে এই কালীপুজোর নাম দূরত্ব দূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। মৌতড়ের এই জাগ্রত পুজো বর্তমানে শোভারাম বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরসূরিদের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। জেলার সবচেয়ে বড় এবং রাজ্যের মধ্যে অন্যতম কালীপুজো হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

 

প্রায় প্রতিটি অমাবস্যাতেই বিশেষ পুজো হয় তবে দীপান্বিতা অমাবস্যার দিন মন্দির প্রাঙ্গনে

জড়ো হন অসংখ্য ভক্ত। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মেলাও চলে এখানে। মৌতড়ের বড়ো কালীর পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হল এখানকার বলি প্রথা।

এই প্রথা সেই শুরুর দিন থেকে চলে আসছে এবং বর্তমানে বহু ভক্ত এই প্রথায় অংশ নেন।

 

ভক্তদের বিশ্বাস এখানে মা কালী ভীষণ জাগ্রত এবং মায়ের পুজো দিয়ে প্রার্থনা করলে সবার সব মনস্কামনা পূর্ণ হয়।

 

বাংলার প্রাচীন কালী পুজোগুলি নিয়ে ধারাবাহিক আলোচনা চলতে থাকবে। ফিরে আসবো পরবর্তী পর্বে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।