বাংলার শিব – কেশবেশ্বর শিব মন্দিরের কথা
পন্ডিতজি ভৃগুশ্রী জাতক
সারা বাংলা জুড়ে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য শিব মন্দির। চৈত্র সংক্রান্তি তথা নীল ষষ্ঠী উপলক্ষে প্রায় সবগুলি মন্দিরই বিশেষ সাজে সেজে ওঠে।
তেমনই একটি মন্দির দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কেশবেশ্বর শিব মন্দির যা নিয়ে আজকের পর্ব।
বিখ্যাত সাবর্ণ রায় চৌধুরী বংশের অন্যতম সদস্য ছিলেন জমিদার কেশবরাম রায় যিনি ছিলেন তৎকালীন বঙ্গ সমাজের অন্যতম গুণী ও সন্মানীয় ব্যাক্তি। কেশবরাম কাশীর বিশ্বনাথের স্বপ্নদর্শনে যে সন্তান লাভ করেছিলেন তাঁর নাম রাখেন শিবদেব, যিনি সন্তোষ রায় চৌধুরী নামে পরিচিত। কেশবরাম রায় ১৬৯৯ সালে ঔরঙ্গজেবের কাছ থেকে স্বতন্ত্র ‘রায় চৌধুরী’ খেতাব পেয়েছিলেন সেই থেকে তারা রায় চৌধুরী পদবি
ব্যাবহার করছেন।
ব্রিটিশ আমলে সমগ্র দক্ষিণবঙ্গের সমাজপতি কেশবরাম দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারে যে শিবমন্দির এবং শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করে যান তার কেশবরামের নামানুসারে নাম হয় কেশবেশ্বর।
মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছেন মহাদেব, লোকমুখে শোনা যায় যে কাশী থেকে আনা হয়েছিল এই শিবলিঙ্গ। শিবমন্দির প্রায় ৬০ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট একটি আটচালা মন্দির। মন্দিরের ২১টি সিঁড়ির মধ্যে ১৬টি ধাপের সিঁড়ির বেশি ভাগই ইতিমধ্যেই মাটির তলায় লীন হয়েছে। সামান্য কয়টি সিঁড়ি দেখা যায়।বিশাল নন্দী মূর্তিও রয়েছে এখানে।
প্রায় সারা বছরই এই মন্দিরে জন সমাগম হয় তবে শিবরাত্রির দিন এবং চৈত্র মাসেরশেষে নীল ষষ্ঠীর সময়ে বিশেষ পূজা হয় কেশবেশ্বর মন্দিরে।সেই সময়ে বিশাল সংখ্যক ভক্তসমাগম ঘটে এই মন্দির চত্বরে।বহু মানুষ আসেন নিজের মনোস্কামনা নিয়ে। শোনা যায় বাবা কেশবেশ্বর তার ভক্তদের খালি হাতে ফেরান না।বহু মানুষের জীবনের দুঃখ কষ্ট বাবা কেশবেশ্বর দুর করেছেন বলে জানা যায়।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে। চৈত্র মাসের এই বিশেষ কয়েকটি দিনে বাংলার প্রাচিন এবং ঐতিহ্য সম্পন্ন শিব মন্দির গুলি নিয়ে
ধারাবাহিক ভাবে আলোচনা চলতে
থাকবে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।