বাংলার কালী – বেগুন বাড়ীর কালীপুজো 

122

আজকের বাংলার কালী পর্বে আপনাদের পাশকুড়ার বেগুনবাড়ি শ্রী শ্রী শ্মশান কালী মায়ের পুজোর ইতিহাস জানাবো।এই পুজোর বয়স আড়াইশো বছরের বেশি।

 

একটি প্রচলিত লোককাহিনী অনুসারে রাজা রাজনারায়ণ রায়ের প্রধান কুস্তিগীর ছিলেন হিনু ডাং এবং দিনু ডাং নামে দুই ভাই। এই দুই ভাই ছিলেন অতি দরিদ্র পরিবার থেকে। সেই সময়ে, কলেরার কোন চিকিৎসা ছিল না, কলেরার প্রকোপে গ্রামের পর গ্রামের মানুষ মারা যেত। একসময় এই এলাকায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে হিনু ডাঃ ও দিনু ডাং দুজনেই খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। বাঁচার আশা যখন প্রায় নেই তখন

তারা দেবী কালীর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন  এবং তার পূজা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আরোগ্য কামনা করেছিলেন। বেশ কিছু দিন পর দুই ভাই সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে মন্দির তৈরি বা পূজার ব্যবস্থা করার সামর্থ্য তাদের ছিল না। আবিষ্কার। এরা ছিলো বাগদি সম্প্রদায় ভুক্ত অত্যান্ত শক্তি শালী এবং সাহসী। শেষ এই দুই ভাই তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ডাকাতি শুরু করেন এবং মায়ের পুজোর সাথে সাথে একটি মন্দিরও তৈরি করেন।সেই সময়ে এখানে বেগুন খেতে প্রচুর বেগুন ফলতো এবং বেগুন থেকে নাম হয় বেগুন বাড়ী। কালী মন্দিরের নাম হয় বেগুনবাড়ি কালী মন্দির।

 

অতীতে নর বলীর কথা শোনা গেলেও বর্তমানে ছাগ বলি প্রথা চালু রয়েছে আগত তীর্থযাত্রী গণ তাদের মানত পূরণের জন্য হাজার হাজার ছাগল বলি দেন।

 

প্রতি বছর বাংলা জৈষ্ট্য মাসের অমাবস্যা তে পুজো শুরু হয় এবং প্রতিমা নিরঞ্জন হয় আষাঢ় মাসের অমাবস্যা তে। সেই সময়ে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের হাজার হাজার তীর্থযাত্রী জড়ো হন এবং সেই সঙ্গে ওড়িশা, বিহার ও ঝাড়খন্ডের আদি জনজাতি

এসে উপস্থিত হন শিকার উৎসবের জন্যে।

 

ফিরে আসবো বাংলার কালীর পরবর্তী পর্ব নিয়ে আগামী কাল। যথা সময়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।