পীঠ নির্ণয় তন্ত্র মতে একান্নটি শক্তি পীঠের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য শক্তি পীঠ হল বিরাট শক্তিপীঠ। উত্তর বঙ্গের দক্ষিন দিনাজপুর জেলায় এই শক্তিপীঠ অবস্থিত।সতীর দেহ অংশগুলি যখন পৃথিবীর বুকে ছড়িয়ে পড়েছিল তখন এই স্থানে দেবীর বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুল পতিত হয়েছিল।
স্থানীয় ভাষায় এটি বিদ্যেশ্বরী মন্দির নামে খ্যাত এবং দেবী অম্বিকা বা বিদ্যেশ্বরী নামে পরিচিত
এখানে ভৈরব হলেন অমৃতাক্ষ। আত্রেয়ী নদীর ধারে অবস্থিত মায়ের মন্দির এবং তার পাশেই ভৈরবের থান।
এই মন্দির প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িয়ে আছে মাতৃসাধক মুরারি মোহন ভট্টাচার্যর নাম। কৈশোরে তিনি দেবী কামাখ্যার নির্দেশে গৃহত্যাগ করেন এবং কামাখ্যা ধামে বারো বছর কঠিন সাধনা করতে থাকেন। পরবর্তীতে দেবীর নির্দেশে আত্রেয়ী নদীর তীরে তিনি আসেন। পরে দেবী তাকে ওই স্থানে গার্হস্থ্য ধর্ম পালন করার নির্দেশ দেন।
শোনা যায় একদিন সন্ধ্যার সময় আত্রেয়ীর নদীর তীরে গভীর জঙ্গলে তিনি উজ্জ্বল আলোক ছটা দেখে বুঝতে পারেন যে সেখানেই দেবীর অবস্থান রয়েছে।তারপর জঙ্গল পরিষ্কার করে দেবীর স্থান আবিষ্কার করেন তিনি এবং নিত্য পুজো শুরু করেন । সংসার জীবনে তার এক কন্যার জন্ম হয়। কন্যার নাম রাখেন বিদ্যেশ্বরী। বিদ্যেশ্বরী বাবাকে পুজোর কাজে সাহায্য করত।শোনা যায় একদিন সেই ছোট্ট মেয়ে দেবী মূর্তিতে বিলীন হয়ে যায়। জনশ্রুতি আছে দেবী স্বয়ং বালিকা রূপে সাধক মুরারী মোহনের গৃহে জন্মে ছিলেন। সবই তার লীলা মাত্র। দেবীকে সেই বালিকার নামেই অর্থাৎ বিদ্যেস্বরী নামে ডাকা হয়।
প্রতিদিন বিদ্যেস্বরী মন্দিরের বেদিতে লাল পাড় এর শাড়ি অর্পণ করা হয়। বিশেষ বিশেষ তিথিতে অন্ন ভোগ হয়। এই মন্দির চত্বরে নাকি অনেকেই বিশাল আকৃতির বিষধর সাপেদের দেখা পায় তবে তারা কারুর ক্ষতি করেনা।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে। থাকবে অন্য
এক শক্তি পীঠ নিয়ে কথা। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।