একান্ন পীঠ – বরাহী দেবী

116
পুরান অনুসারে দেবী সতীর নিচের পাটির দাঁত
সমুহ পরে ছিলো হরিদ্বার এর কাছে
পঞ্চসাগরে এই সতী পীঠে দেবী বরাহী নামে পূজিতা হন।পীঠ নির্ণয় তন্ত্র মতে এটি চৌত্রিশ
তম সতী পীঠ।দেবীর ভৈরব হলেন মহারুদ্র।
পুরান , মহাভারত সহ একাধিক শাস্ত্রে এই পীঠের উল্লেখ আছে।পুরান মতে নিশাচর নামে এক দৈত্যকে হত্যার জন্য স্বয়ং বিষ্ণু বরাহী কে সৃষ্টি করেছিলেন।বরাহী হলেন বিষ্ণুর নারী শক্তি।
সনাতন ধর্মে যে সাত আট জন মাতৃ দেবীর কল্পনা করা হয়, তার মধ্যে দেবী বরাহী হলেন অন্যতম। দেবীর রূপ শূকরের মত। তার এক হাতে রয়েছে চক্র এবং অন্য আরেক হাতে রয়েছে তলোয়ার।
এই পীঠ বহুকাল অজ্ঞাত ছিলো তারপর মহাভারতের যুগে পান্ডবরা যখন বনবাসে দিন কাটাচ্ছিলেন তখন গভীর এবং দুর্গম স্থানে এই দেবীর পীঠ স্থান সন্ধান করেছিলেন কুন্তী পুত্র ভীম। তিনি সেই গভীর জঙ্গলে মা বরাহীর তপস্যা করলেন, মা বরাহী ভীমকে দর্শন দিলেন এবং তাকে রক্ষা করার আশীর্বাদ দিলেন।
তারপর মহাভারত পরবর্তী সময়ে আবার এই সতী পীঠ লোক চক্ষুর অন্তরালে চলে যায়। দেশ স্বাধীন হওয়ার কিছুকাল পরে সালে জনৈক প্রভুচন্দ্র নামের একজন মাতৃ সাধক মায়ের এই পীঠ স্থান আবিষ্কার ও সংস্কার করেন।আবার এই সতী পীঠ সবার কাছে জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং বহু তীর্থ যাত্রী আসতে শুরু করেন।
অনেকে আবার মনে করেন বৌদ্ধ দেবতা বজ্র বারাহি ও মরিচির মিশ্রনে এই বরাহী দেবী
সৃষ্টি হয়েছেন। দেবী বরাহীকে অনেক জায়গায় মহিষবাহনা হিসেবেও দেখানো হয়
আবার রক্ত বীজের কাহিনীতে দেখা যায় যে, একটি মৃতদেহের উপর বসে শূকরের বেশ ধরে দাঁত দিয়ে বরাহী দেবী শত্রু নিধন করছেন।
সব মিলিয়ে যেনো কোনো জটিল রহস্য জড়িয়ে আছে দেবী বরাহীর সাথে।
ফিরে আসবো আগামী পর্বে অন্য একটি শক্তি পীঠ
এবং তার ইতিহাস নিয়ে। পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।