বাংলার কিছু শক্তিপীঠ নিয়ে ইতিমধ্যে আলোচনা করছি |আজকের পর্বে বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য চত্রিশগড়ে অবস্থিত একটি শক্তি পীঠ নিয়ে আলোচনা হবে। আজকের শক্তি পীঠ দন্তেশ্বরী|
শক্তি পীঠ দন্তেশ্বরী অবস্থিত ছত্তিশ গড়ের দান্তেওয়ারা অঞ্চলে।এই দেবীর নামেই এই
অঞ্চনের নামকরণ বলে অনেকে বিশ্বাস করেন|শাস্ত্র মতে দেবী সতীর দাঁত পতিত হয়েছিলো এখানে।
সঠিক সময় কাল না জানা গেলেও মনে করা হয় বহু প্রাচীন কালে এই স্থানে দেবী দন্তেশ্বরীর মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন কাকতীয় বংশের রাজারা|দেবী দন্তেশ্বরী এই প্রাচীন রাজ বংশের কুল দেবী|
আনুমানিক চতুৰ্দশ শতাব্দীতে তৈরী হয়েছিলো এই দেবী মন্দির|মন্দিরে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে
দন্তেশ্বরী দেবীর মূর্তি যা একটি কৃষ্ণ বর্ণের পাথর থেকে তৈরী|মূল মন্দির চারটি ভাগে বিভক্ত যথা গর্ভ গৃহ,মহা মণ্ডপ, মুখ্য মণ্ডপ এবং সভা মণ্ডপ|মূল মন্দির কে ঘিরে রয়েছে একটি সুউচ্চ প্রাচীর|
স্থানীয় অধিবাসী দের কাছে দেবী দন্তেশ্বরী অত্যান্ত প্রসিদ্ধ এবং শ্রদ্ধার|বিশেষ বিশেষ তিথিতে বিশেষ পুজো ছাড়াও প্রতিবছর নব রাত্রি ও দশেরা উৎসব এখানে মহাসমারোহে পালিত হয় ও সেই উপলক্ষে ব্যাপক জনসমাগম হয়|
সমস্ত শক্তিপীঠের মধ্যে এটিই একমাত্র মন্দির যেখানে দুটি নয় তিনটি নবরাত্রি পালিত হয়। চৈত্র ও শারদীয়া নবরাত্রি ছাড়াও এখানে ফাল্গুন মাসেও নবরাত্রি পালিত হয়। একে স্থানীয় ভাষায়
ফাগুন মাধাই বলা হয়।
যারা তন্ত্র নিয়ে চর্চা করেন তাদের কাছে এই স্থানের আলাদা মহাত্ম আছে।দন্তেশ্বরী শক্তিপীঠকে তান্ত্রিকদের ধ্যানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুগ যুগ ধরে অনেক তান্ত্রিক ও অঘোরি এখানকার পাহাড়ের গুহায় তন্ত্র বিদ্যা চর্চা করেন।
খেলোয়াড় হোক বা রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব। ব্যাবসায়ী হোক বা উচ্চ পদস্ত কোনো
সরকারি পদাধিকারী। চত্রিশ গড়ে সবাই নিজের মনোস্কামনা পূরণের জন্য দেবী দন্তেশ্বরীর স্মরণ নেন এবং বিশ্বাস করা হয় দেবী কাউকে শুন্য হাতে
ফেরান না।
আজকের পর্বে এই টুকুই। ফিরবো আগামী পর্বে|অন্য কোনো শক্তিপীঠের কথা নিয়ে।
চলতে থাকবে একান্ন পীঠ নিয়ে
ধারাবাহিক এই আলোচনা।পড়তে থাকুন।
ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।