শাস্ত্রে আছে সতী যখন মহাদেবের কাছে তাঁর পিতৃগৃহে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন, তখন মহাদেব তাঁকে অনুমতি দেননি। ক্ষুব্ধ দেবী সতী তাঁর দশটি রুদ্র রূপের মাধ্যমে সেই সময় মহাদেবকে দশ দিকে ঘিরে ধরেন। তাঁকে ভয় দেখান । এই দশটি রূপ মহাবিদ্যা নামে খ্যাত।এই দশ মহাবিদ্যার এক বিদ্যা বগলা মুখীর একটিপ্রাচীন মন্দির রয়েছে খাস কলকাতায়। আজ জানাবো কি ভাবে এই মন্দির তৈরী হলো এখানে।আজকের উত্তর কলকাতার দমদমে রয়েছে এই দশ মহাবিদ্যার অষ্টম মহাবিদ্যা দেবী বগলামুখীর মন্দির ।প্রায় একশো বছর স্থানীয় জমিদার রাধিকাপ্রসাদ সান্যাল স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। স্বপ্নাদেশে তিনি জানতে পেরেছিলেন যেখানে আজ মন্দির, তার মাটির নীচে দেবীমূর্তি রয়েছে। এরপর তিনি মাটি খুঁড়িয়ে সেখান থেকে দেবীর মূর্তিটি উদ্ধার করেন এবংসেখানে মন্দির তৈরী করে দেবীকে প্রতিষ্ঠিত করেন।দমদমে দেবী বগলার মন্দিরটি একটি পঞ্চরত্নের মন্দির। দেবীর বিগ্রহ এখানে পাথরের বেদিতে স্থাপিত। দেবীর পুজোয় লাগে হলুদ বস্ত্র, হলুদ ফুল, হলুদ মিষ্টি।ভক্তদের বিশ্বাস শতবর্ষ প্রাচীন এই দেবীর মন্দির অত্যন্ত জাগ্রত।মনস্কামনা পূরণের পাশাপাশি, বিভিন্ন গ্রহগত সমস্যা সমাধানের জন্যও দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এই মন্দিরে ছুটে আসেন। এখানে প্রতিদিন একবেলা দেবীর অন্নভোগ হয়। সন্ধ্যায় দেওয়া হয় ফল এবং মিষ্টি।দেবী বগলার প্রকৃত অর্থ হল যিনি কোনও কিছুর নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নিতে সক্ষম। শাস্ত্র মতে দেবী যে কোনও দোষকে গুণে পরিণত করতে পারেন। যেমন তিনি বাক্যকে স্তবে, অজ্ঞানকে জ্ঞানে, শক্তিহীনতাকে শক্তিতে আর পরাজয়কে জয়ে পরিবর্তন করতে সক্ষম।তন্ত্র অনুযায়ী দেবী বগলা ভক্তের মানসিক ভ্রান্তিনাশের দেবী। অনেকে দেবী বগলাকে শত্রুনাশের দেবীও বলে থাকেন। দেবীর এক হাতে আছে মুগুর বা গদা এবং অন্য হাতে আছে কাটা মুন্ডু।দেবীর মন্দির এবং প্রতিমা সবই অত্যন্তসুন্দর এবং এবং এক অপার্থিব এবং আধ্যাত্মিক শান্তি পাওয়া যায় এখানে।ফিরে আসবো আগামী পর্বে। নতুন কোনো দেবী মাহাত্ম বা মন্দির রহস্য নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন ধন্যবাদ।