দেবী আদ্যা শক্তি নানা রূপে নানা নানা নামে এই বঙ্গের নানা প্রান্তে পূজিতা হন। আজ দেবীর যে রূপটির কথা বলবো তা দয়াময়ী নামে খ্যাত।বর্তমান হুগলি জেলার চুঁচুড়ায় দয়াময়ী কালী মন্দির যার পথ চলা শুরু সেই মোঘল আমলে।আজ লিখবো প্রাচীন এই মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে।বাদশা আকবরের বিশ্বস্ত রাজস্বসচিব রাজা টোডরমল চুঁচুড়া অঞ্চলটি রেখেছিলেন তার অনুগত জায়গীরদার জিতেন রায়ের তত্ত্বাবধানে। শাক্ত জিতেন ছিলেন দেবী কালিকার ভক্ত।তিনিই এইখানে নির্মাণ করেন মন্দির এবং দেবী দয়াময়ীকে প্রতিষ্ঠা করেন শাস্ত্র মতে।সেই আমলে তৈরী বিশেষ পাতলা ইট দিয়ে গড়ে ওঠে এই মন্দির।অনেকটা জায়গা জুড়ে রয়েছে মন্দিরপ্রাঙ্গণ। উন্মুক্ত প্রাঙ্গনের পূর্বদিকে দেবী দয়াময়ীর মন্দির।পাশেই পরপর দাঁড়িয়ে চারটি শিবমন্দির। নাটমন্দিরহীন দেবী মন্দিরের চুড়ো গম্বুজাকৃতি। ছোট ছোট সিঁড়ির ধাপের মতো উঠে গিয়েছে নিচ থেকে উপর পর্যন্ত। মন্দির বিশাল নয় তবে ভারী সুন্দর গঠনশৈলী এবং প্রাচীনত্ত্ব এবং ঐতিহাসিক তাৎপর্যর দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই দয়াময়ী দেবীর মন্দির।স্থানীয় দের কাছে অত্যান্ত জাগ্রত দেবী দয়াময়ী।পুরোনো এই মন্দিরের গর্ভগৃহে দেবী কালীর একটি বিগ্রহ রয়েছে যার উচ্চতা প্রায় দেড় থেকে পৌনে দু-হাত এবং মূর্তিটি কষ্টিপাথরে নির্মিত শাস্ত্র মতে দেবী দক্ষিণাকালী রূপেই বিরাজ করছেনপাথরের বেদিতে মহাদেব শুয়ে আছেন দয়াময়ীর পদতলে। কষ্টি পাথরের হলেও এখানে দেবী মূর্তি হাল্কা খয়েরি আভাযুক্ত তাই বিগ্রহের আকর্ষণই আলাদা।তীক্ষ্ণ নাক। উন্মুক্ত কেশ রাশি।বিগ্রহের মুখমণ্ডল সামান্য লম্বাটে।দেবীর ত্রিনয়ন এবং জিহ্বা স্বর্ণমণ্ডিত। কণ্ঠহার মুণ্ডমালা, হাতের খড়গ রুপোয় তৈরি।সব মিলিয়ে দয়াময়ী কালীর অপরূপ রূপ প্রত্যক্ষ করলে হৃদয় ও চোখ জুড়িয়ে যায়।প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে অগণিত ভক্তের সমাগম ঘটে দেবীর শ্রীচরণে পুজাঞ্জলি নিবেদন করতে।আপনারাও সুযোগ পেলে এবং দেবীর ইচ্ছে হলে অবশ্যই দেবীর পুষ্পাঞ্জলি দেয়ার এবং প্রসাদ পাওয়া সুযোগ কাজে লাগাতে পারেন।ফিরে আসবো আগামী দিনে। নতুন পর্ব নিয়ে। চলতে থাকবে এই ধারাবাহিক আধ্যাত্মিক আলোচনা। পড়তে থাকুন। ভালো থাকুন।ধন্যবাদ।