দশ মহাবিদ্যার অন্যতম দেবী হলেন ধুমাবতী। আমাদের দেশে ধূমাবতীর মন্দিরের সংখ্যা অত্যন্ত অল্প।বারাণসীর একটি মন্দিরে ধূমাবতী হলেন প্রধান দেবতা।আজকের পর্বে আপনাদের এই মন্দিরের কথা জানাবো।বারাণসীতে অবস্থিত এই ধুমাবতী মন্দিরকে কিছু শাস্ত্রে শক্তিপীঠ বলে দাবি করা হয়। দেবী ধুমাবতীর রূপ কিছুটা ব্যাতিক্রমী।ধূমাবতী তন্ত্র গ্রন্থে তাঁকে বৃদ্ধা ও কুৎসিত বিধবার রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি শীর্ণকায়া, দীর্ঘাকার, রোগগ্রস্থা ও পাণ্ডুরবর্ণা। তিনি অশান্ত ও কুটিল হৃদয়। তাঁর দেহে অলংকারাদি নেই। তিনি পুরনো মলিন বস্ত্র পরিধান করে থাকেন। তিনি মুক্তকেশী।তিনি এক হাতে একটি কুলো ধরে থাকেন এবং অপর হাতে বরমুদ্রা বা চিন্মুদ্রা দেখান। তিনি অশ্ববিহীন রথে আরূঢ়া এবং তাঁর পতাকায় কাকের ছবি থাকে।তার এই পরিচিত রূপেই তিনি এই মন্দিরে বিরাজ করছেন।বারাণসীর এই মন্দিরে ফল ও ফুল দিয়ে দেবীর পূজা করা হয়। সাধারণ সন্ন্যাসী ও তান্ত্রিকরাই দেবীর পুজো করে থাকেন এবং দেবীর অমঙ্গলজনক সত্ত্বাটির জন্য কেবলমাত্র তান্ত্রিক বীরাচারেই দেবীর পূজা করা হয়। তবে এই মন্দিরে দেবী গ্রামদেবতা বা স্থানীয়দের রক্ষাকর্ত্রীরূপেও পূজিতা হন। এখানে বহু নব বিবাহিত যুগলেও দেবীর পূজা দিতে আসেন।কথিত আছে, ধূমাবতী মহাপ্রলয়ের সময় উপস্থিত হন। প্রলয়কালে উত্থিত প্রকাণ্ড কৃষ্ণ মেঘ তাঁর স্বরূপ। এই কারণে সহস্রনাম স্তোত্রে তাঁকে “প্রলয়রূপিণী” বা “প্রলয়মত্তা”, বলা হয়। অন্যমতে, তিনি মহাকালরূপী শিবের বিলোপের মনে করা হয় মহাপ্রলয় বা বিশ্ববিনাশের পর উত্থিত ধোঁয়ার প্রতীক দেবী ধুমাবতী।যিনি তিনি ধোঁয়ার আকারে বিহার করেনধূমাবতী সাধারণত অমঙ্গলের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হলেও সহস্রনাম স্তোত্রে তাঁর কয়েকটি সদগুণেরও উল্লেখ রয়েছে। তিনি বরদাত্রী ও কোমলহৃদয়া। এবং সন্তানদাত্রী।কেতু যাদের অশুভ তারা ধুমাবতীর পুজো করলে সুফল পান।ফিরে আসবো আগামী পর্বে। দেবী মাহাত্ম নিয়ে।আলোচনা হবে নতুন কোনো মন্দির বাদেবী মাহাত্ম নিয়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।