দেবী মাহাত্ম – দেবী সিদ্ধেশ্বরী

209

দেবী মাহাত্মর আজকের পর্বে আপনাদের বাংলার কোচবিহার রাজ্যের দেবী সিদ্ধেশ্বরীর কথা লিখবো যার সাথে জড়িত আছে এক অদ্ভুত ও অলৌকিক ঘটনা।

কুচবিহারের দ্বিতীয় মহারাজা নরনারায়ন ছিলেন দেবী কামাখ্যার ভক্ত। নিয়মিত তার রাজ্য থেকে নৈবেদ্য পাঠানো হতো দেবীর পূজায়। জনশ্রুতি আছে একবার সন্ধ্যা আরতির সময় মহারাজ নরনারায়ন এক পূজারীর সাহায্যে আড়াল থেকে  নৃত্যরতা দেবীকে দর্শন  করেন।মা কামাখ্যা এই বিষয়ে অবগত হয়ে ক্রুদ্ধ হন ও রাজাকে অভিশাপ দেন যে তিনি বা তার বংশের কেউ আর কোনো দিন কামাখ্যা দেবীকে দর্শন করতে পারবেননা।

সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের পশ্চিম প্রান্তে প্রাচীরবেষ্টিত একটি প্রাচীন কামরাঙা গাছ আছে। গাছটির গোড়া সুতো দিয়ে বাঁধানো এবং গোড়াতে সিঁদুর লিপ্ত কয়েকটি শিলাখণ্ড আছে।সেই প্রাচীন কাল থেকে দেবীর আদেশ অনুসারে এই কামরাঙা গাছটি দেবী কামাখ্যার প্রতীক এবং পীঠস্থান  রূপে পূজিত হয়।দেবী কামাখ্যা দর্শনের অভিশাপ থাকায় তৎকালীন কুচবিহার রাজ্যের মহারাজগণ,রাজগণ বর্তমান জেলার রাজজ্ঞাতী বা রাজগণ এই কামরাঙা গাছেই দেবী কামাখ্যাকে দর্শন করেন এবং পূজা দেন।

পরবর্তীতে মহারাজা নরনারায়ণ অত্যন্ত মর্মাহত হয়ে মায়ের কাছে ব্যাথিত চিত্তে বলেন যে, তার অপরাধে তার বংশধরেরা মায়ের মূর্তি দর্শন ও পূজা দেওয়া থেকে কেন বঞ্চিত হবে। এতে মা কামাখ্যা সদয় হয়ে বলেন যে তিনি এবার থেকে তার রাজ্যের বানেশ্বর শিব মন্দির এর কাছে সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরের দেবী বিগ্রহে এবং পাশে প্রাচীন কামরাঙা বৃক্ষে দেবীরূপে সর্বদা বিরাজ করবেন। মহারাজগন এবং রাজগণ  সেখানে পূজা দিলে মা কামাখ্যার দর্শন ও পূজা দেওয়া হবে।

আজও প্রথা মেনে স্বপ্ন প্রদত্ত মন্ত্র দিয়ে দেবী সিদ্ধেশ্বরীকে আরাধনা করা হয়।উত্তর বঙ্গ বাসির কাছে এই দেবস্থান বা পীঠস্থান হলো “দ্বিতীয় কামাখ্যাপীঠ” যেখানে প্রতিটি বিশেষ তিথিতে বহু মানুষ আসেন দেবীকে দর্শন করে তার আশীর্বাদ নিতে।

বহু এমন অলৌকিক ঘটনা ও মন্দিরের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা বাকি আছে। ফিরে আসবো যথা সময়ে। পড়তে থাকুন।ভালো থাকুন। ধন্যবাদ।