দশ অবতার রহস্য – পরশুরাম

597

দশ অবতার পর্বে আজ পরশুরাম ও পরশুরাম অবতারের কথা বলবো|পুরাণ অনুযায়ী বিশ্বে শান্তি আনতে ধরিত্রিকে ২১ বার ক্ষত্রিয়শূন্য করেছিলেন বিষ্ণুর ষষ্ঠ অবতার পরশুরাম তবে নিজের মাতৃ হত্যার জন্যও তিনি সমালোচিত|তার কর্ম কাণ্ডের সাথে জড়িত তার বিখ্যাত কুঠার যার কথা আমি আগে আলাদা করে বলেছি|ঋষি জমদগ্নি ও স্ত্রী রেণুকার পাঁচ সন্তান। বসু, বিশ্বাসবসু, বৃহৎ-ভানু, বৃহৎ-কণ্ব ও পরশুরাম। পরশুরাম ছিলেন তাদের কনিষ্ঠ সন্তান। শাস্ত্রে পরশুরামের জন্ম নিয়ে নানা কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। ভাগবত পুরাণ অনুসারে, একসময় সমাজে ক্ষত্রিয় রাজাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি খুবই বেড়ে যায়। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে সকলে ব্রক্ষা ও বিষ্ণুর কাছে অভিযোগ জানায়। ক্ষত্রিয়দের শায়েস্তা করার জন্য ব্রহ্মা ও বিষ্ণুর বরে পরশুরাম জন্মগ্রহণ করেন।তিনি বিষ্ণুর অবতার রূপেই এসেছিলেন|পরশুরাম ব্রাহ্মণ ঘরে জন্মগ্রহণ করলেও কর্মে তিনি হয়েছিলেন ক্ষত্রিয়। তিনিই প্রথম যোদ্ধা ব্রাহ্মণ।মহাদেবকে তুষ্ট করে পরশু অর্থাৎ কুঠার অস্ত্রটি লাভ করেন। সেই থেকে তার নাম হয় পরশুরাম। তার প্রকৃত নাম ছিল রাম। মহাদেবের নির্দেশে এ অস্ত্র দিয়ে তিনি অনেক অসুর নিধন করেন। ধীরে ধীরে তিনি হয়ে উঠলেন এক পরাক্রমশালী যোদ্ধা এবং অমর ও অজেয়| জমদগ্নি একবার নিজ স্ত্রীর উপর ক্ষুব্ধ হয়ে পুত্রকে মাতৃ হত্যার আদেশ দিলেন|পরশুরাম পিতৃ আজ্ঞা পালন করেন ও কুঠার দিয়ে মাতৃহত্যা করলেন এই পাপে তার কুঠার তার হাতে সংযুক্ত হয়ে যায়|পরবর্তীতে পুত্রের কাজে জমদগ্নি খুশি হয়ে তাকে বর প্রার্থনা করতে বলেন এবং অন্য সন্তানদের অভিশাপ দেন। পরশুরাম মায়ের পুনর্জন্ম, মাতৃহত্যাজনিত পাপ ও মাতৃহত্যা স্মৃতি বিস্মৃত হওয়া, ভাইদের জড়ত্বমুক্তি, নিজের দীর্ঘায়ু ও অজেয়ত্বের বর প্রার্থনা করেন। জমদগ্নি তাঁকে সবগুলো বরই প্রদান করেন এবং ব্রহ্মকুণ্ডে স্নান করার পর হাত থেকে কুঠার বিচ্ছিন্ন হয়েছিল পরশুরামের|ক্ষত্রিয়দের হত্যা করে তাদের রক্ত দিয়ে তিনি সমস্তপঞ্চক প্রদেশের পাঁচটি হ্রদ পূর্ণ করেন।তার সব কর্মকান্ড সম্পাদিত হয়েছিলো তার অস্ত্র কুঠারের মাধ্যমে|পরশুরাম ও তার কুঠার যেনো বীরত্বের প্রতিশব্দ|সনাতন ধর্ম শাস্ত্র গুলিতে অন্যতম আলোচিত ও শক্তিশালী অস্ত্র পরশুরামের বিখ্যাত কুঠার যা অন্যতম শক্তিশালী প্রাচীনতম পৌরাণিক অস্ত্র|শাস্ত্রে যে কজন অমরত্বের অধিকারী হয়েছেন, তাদের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও বর্ণময় এক চরিত্র হলেন পরশুরাম। রামায়ণ ও মহাভারতেও পরশুরামের কথা উল্লেখ রয়েছে।পরবর্তী পর্বে যথারীতি অন্য একটি অবতার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|