মন্দির বাজারের শ্মশান কালী

804

দেবী কালী বিভিন্ন রূপে পূজিতা হন যার মধ্যে দেবীর শ্মশান কালী রূপ রয়েছে|দেবীর এই বিশেষ রূপের পুজো করতো বাংলার দুর্ধর্ষ ডাকাতরা এবং উচ্চ মার্গের তন্ত্র সাধকরা|আজ আপনাদের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার মন্দির বাজারে অবস্থিত এক শ্মশান কালীর কথা বলবো|দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রাচীন মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুড়ে রয়েছে এক গা-ছমছমে শ্মশান। কথিত আছে এই শ্মশানে নাকি একসময় আস্তানা করত সব সাধক আর তান্ত্রিকদের দল। উদ্দেশ্য ছিল শব সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করা। এখনো পর্যন্ত এই শ্মশানে গেলে হাড় হিম হয়ে যাবে। আদিগঙ্গার পাড়ে এই শ্মশানে মা কালী পূজিতা হন করুণাময়ী নামে।প্রচলিত আছে এই মন্দিরে কালীপুজোয় নাকি গভীর রাত হলেই চলে নানান রোমাঞ্চকর ঘটনা। মন্দিরের সেবায়েতরা মেতে ওঠেন শ্মশান জাগানোর খেলায়। কথিত আছে, একসময় নরমুণ্ডর মালা দিয়ে চলত তন্ত্র মতে দেবীর আরাধনা। বর্তমানে বলি দেওয়া হয় না, কিন্তু কালীপুজোর দিন ডাকিনী যোগিনীকে দেওয়া হয় কাঁচা মাংস, মদ আর ছোলা। তার পাশাপাশি থাকে শিয়াল ভোগ। আজও নাকি নড়মুন্ডির মালা পুজোয় পুজোয় ব্যাবহার হয়|প্রচলিত এই সব জশ্রুতি আজও লোকের মুখে মুখে প্রচলিত|প্রায় ১০৭ বছর আগে এই শ্মশানে টালির ছাউনির মধ্যে কালী মায়ের আরাধনার সূচনা করেছিলেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী। এখানে জনশ্রুতি রয়েছে, এই মণিলাল চক্রবর্তী নাকি যখন যুবক ছিলেন তখন তন্ত্রের দীক্ষা নিয়েছিলেন। সাধনার জন্য বেছে নেন এই শ্মশানকে।পরবর্তীকালে মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে শ্মশানের নিকটস্থ জঙ্গলেই দেবীর নিত্য পূজা শুরু করেন। সেই থেকে আজও এখানে ধুমধাম করে আরাধনা করা হয়ে আসছে মা কালীর। এখানে বলি দেওয়ার প্রথা নেই কিন্তু কাঁচা মাংস ভোগে দেওয়া হয়।বহুদিন আগেই মণিলাল বাবুর মৃত্যু হয়েছে, তাঁর মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারীরা এই শ্মশান কালীর মন্দিরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন । তারা বংশ পরম্পরায় তন্ত্র শিক্ষা লাভ করেন এবং নানাবিধ গুপ্ত বিদ্যায় পারদর্শী বলে জশ্রুতি প্রচলিত আছে|দীপাবলী উপলক্ষে প্রতিবছর এই শ্মশানকালী মন্দিরে মহাসমারোহে পুজো অনুষ্ঠিত হয় যা দেখতে আসেন বহু মানুষ|আজকের কালী কথা শেষ করার আগে জানিয়ে রাখি দীপান্বিতা অমাবস্যা তিথিতে তারাপীঠ মহা শ্মশানে ও আমার নব নির্মিত গৃহ মন্দিরে বিশেষ হোম যজ্ঞর মাধ্যমে শাস্ত্রীয় পদ্ধতিতে গ্রহ দোষ খন্ডনের সব ব্যবস্থা থাকবে|আমি নিজে উপস্থিত থাকছি তারাপীঠে|যেকোনো জ্যোতিষ সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে যোগাযোগ করতে পারেন এখন থেকেই|দীপাবলী উপলক্ষে চলতে থাকবে এই কালী কথা ফিরে আসবো আগামী পর্বে কালী কথা নিয়ে|থাকবে অন্য কোনো মন্দিরের ইতিহাস|পড়তে থাকুন|ভালো থাকুন|ধন্যবাদ|